বিভিন্ন আয়োজনে সাড়ম্বরে সাতক্ষীরায় দৈনিক দেশ রূপান্তরের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুর ১টায় সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার , সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়াত। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশ রূপান্তরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমনের বোন আজিজুন্নেসা আশা’র মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা করেন, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন, দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভিন সেঁজুতি, প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ মোশফিকুর রহমান মিল্টন ও কবি গাজী শাজাহান সিরাজ। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, আওয়ামী লীগনেতা সজল মুখার্জী, মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী, নুরুল ইসলাম, এন্তাজ আলী, বিষ্ণুপদ প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, দায়িত্বশীল পত্রিকা হিসেবে দেশ রূপান্তর মাত্র দুই বছরে পাঠক হৃদয়ে যে অবস্থান নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। সাংবাদিকদের ইতিবাচক লেখনির ফসল হিসেবে সাতক্ষীরার উন্নয়নের চিত্র অচিরেই দৃশ্যমান হবে। সাংবাদিকরা সমাজের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে সঠিক সংবাদ পরিবেশেন করে সমাজকে সচেতন করে তুলতে পারে। করোনা পরিস্থিতি মোকেবেলায় এবং শান্তি শৃংখলায় সাংবাদিকরা ব্যাপক সহায়তা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়েছে। এমন কী ভাস্কর্য বিরোধী মৌলবাদী ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধেও দেশের সংবাদপত্র বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন জাতীয় উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে সাতক্ষীরার আম, মাছ, দুধ, ফসল এসব বিষয়েও সাংবাদিকরা সংবাদপত্রে এনে সংবাদপত্রে এনে দেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা দিতে পারেন। এপ্রসঙ্গে তিনি সাতক্ষীরার রেললাইন ও খুলনা-মুন্সিগঞ্জের চার লেনের সড়ক নির্মাণে জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে প্রশাসনের সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশ রূপান্তর পত্রিকার মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ প্রেমের চেতনাবোধ বিপুল সংখ্যক পাঠকগোষ্ঠীর চেতনাকে জাগ্রত করেছে। প্রিন্ট মিডিয়া টিকিয়ে রাখা এখন চ্যালেঞ্জিং বিষয়। দেশে ডিজিটাল রিপোর্টিংয়ে রংচং মিশিয়ে অনেক মিথ্যা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে বিভ্রান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষ এ অচিরেই এ জায়গা থেকে সরে আসবে। অপসাংবাদিকতার বিপরীতে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায়ও ফিরে আসবে। পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মহিরুহের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে একটি গোষ্ঠী দেশকে পেছন দিকে নিয়ে যেতে চায়। এদের প্রতিহত করতে জনগনকে সোচ্চার হতে হবে। সাংবাদিকদের কলমকে শাণিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, একটি সৃজনশীল সমাজ বিনির্মানের অগ্রণী সারথী হতে হবে সাংবাদিকদের।
সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়াত বলেন, পত্রিকা অনেক কিন্তু পত্রিকা হিসেবে যে দায়িত্ববোধ ও সম্পাদকীয় নীতি তা দেশ রূপান্তরের মধ্যে স্পষ্ট ও প্রমানিত। করোনাকালে মহামারি মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিভাগের পাশাপাশি থেকে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও সাংবাদিকরা সাহসী ভূমিকা পালন করেছে।
শেষে অতিথিরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন এবং বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের সাতক্ষীরা রিপোর্টার আমিনা বিলকিস ময়না, সুজনের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক হেদায়েতুল ইসলাম, সাবেক যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন, চ্যানেল নাইনের কৃষ্ণ ব্যানার্জী, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু, অপরাজেয় বাংলা’র প্রতিনিধি মাষ্টার শহীদুল ইসলাম, বাংলা ট্রিবিউনের আসাদুজ্জামান, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো মুনসুর রহমান, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কিরন্ময় সরকার, সিঙ্গারের সাতক্ষীরা ব্যবস্থাপক এডভোকেট কামরুজ্জামান বিপুল, প্রতিদিনের কন্ঠের প্রতিনিধি মাসুদ হোসেন, পত্রদূতের জাকির হোসেন, শিশু সাংবাদিক অগ্র বিসর্গ, সুজিত পাল, নাট্যকর্মী মনিরুল ইসলাম মিলন, সেকেন্দার আবু জাফর রায়হান, আক্তারুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান থেকে পত্রিকার হকারদের উপহার সামগ্রী দেয়া হয়।
সমাপনি বক্তব্যে প্রবীণ সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী বলেন, দেশে বর্তমানে ৫৫৫টি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। পত্রিকা টিকিয়ে রাখা দুরূহ তারপরও দেশ রূপান্তরের এগিয়ে যাওয়া সংবাদ মাধ্যমের জন্য এ এক আশাজাগানিয়ে ব্যাপার। তিনি নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্যসেনের সাথে সুর মিলিয়ে বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকলে দেশে জিডিপি বৃদ্ধি পায়। আমাদের বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেটি ঘটেছে।
– পত্রদূত নেট।