সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান বলেন, ‘মানবদেহে ভিটামিন এ তৈরি হয় না তাই এটা বাইরে থেকে গ্রহণ করতে হয়। শিশুর জন্মের প্রথম ৬ মাসে মায়ের দুধে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ থাকে কিন্তু পরবর্তীতে শিশুর বাড়ন্ত সময়ে অধিক ভিটামিন এ’র চাহিদার প্রেক্ষিতে সম্পূরক খাদ্য হিসেবে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। পাশাপাশি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, দুধ, কলিজা, মাছ, মাংস, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, লালশাক, কচুশাক, হেলেনচা শাক, পুঁইশাক, পাটশাক এবং পাকা আম, পাকা পেঁপে, পাকা কাঁঠাল ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে ভিটামিন-এ’র চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ভিটামিন এ’র অভাবে চোখের ক্ষতিকর প্রভাবসহ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পায়, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, রক্তস্বল্পতা এবং ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি ও ত্বক মলিন হয়ে যায়। এজন্য ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করতে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার বিকল্প নেই। সকল পর্যায়ের সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান বলেন, শিশুকে ভরাপেটে এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। এতে সাধারণত কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।’ বুধবার (১১জুলাই) সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে সাতক্ষীরার কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন (১ম রাউন্ড) উদ্যাপন উপলক্ষে ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এসব কথা বলেন সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন এনটিভি’র জেলা প্রতিনিধি সুভাষ চৌধুরী, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী, সমকাল’র জেলা প্রতিনিধি এম. কামরুজ্জামান, ইনকিলাব’র জেলা প্রতিনিধি আব্দুল ওয়াজেদ কচি, বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আসাদুজ্জামান, গোলাম সরোয়ার, আব্দুল জলিল, দৈনিক কাফেলার স্টাফ রিপোর্টার এম রফিক, দৈনিক পত্রদূত’র নিজস্ব প্রতিনিধি আব্দুর রহমান, দৈনিক কালের চিত্র’র মফস্বল বার্তা সম্পাদক মেহেদীআলী সুজয়, দৈনিক যুগের বার্তা’র মফস্বল বার্তা সম্পাদক খন্দকার আনিছুর রহমান প্রমুখ।
কর্মশালায় জানান, জেলার সাতটি উপজেলার ২ হাজার ৩১টি টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ১শ ৩৮ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তার মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সি ২১ হাজার ৭শ ২৮ জন শিশুকে ১টি নীল রঙের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সি ২ লক্ষ ৮ হাজার ৪১০ জন শিশুকে একটি লাল রঙের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য কর্মী (সরকারি) ৬শ ২১ জন এবং স্বাস্থ্য কর্মী (বেসরকারি) ২শ ১৮ জন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন ৪হাজার ৬২ জন। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ১৯৭৩ সাল থেকে জাতীয়ভাবে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জুনিয়র স্বাস্থ্য সহকারী শাহিনা খাতুন।
তথ্যঃসাতক্ষীরা জার্নাল ডটকম।