শেখ আরিফুল ইসলাম আশা: গ্রেফতারের ভয়ে সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে পাবনায় নারীসহ গ্রেফতার সাবেক শিবিরের সেক্রেটারি জামায়াত নেতা হাসানুর রহমান হাসান ওরফে মিনিস্টার হাসান।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ভোর রাতে আবাসিক হোটেল থেকে তাকে নারীসহ আটক করে পাবনা সদর থানা পুলিশ। সে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেল ঘাটার তৈলকুপি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায় জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানান দিতে গত বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে তালতলা মিল বাজার এলাকায় সরকার ঘোষিত মদের লাইসেন্স প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। ওই দিন রাতেই সাতক্ষীরা সদর থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। সেখান থেকেই গ্রেফতারের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিল হাসান ওরফে মিনিস্টার হাসান।
এদিকে পালিয়ে থেকেও ওয়াজ মাহফিলের নামে জামায়াত-শিবিরের সাংগঠনিক সম্মেলন করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তবে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বন্ধ ঘোষনা করা হয় মাহফিলের নামে জামায়াতের সেই সম্মেলন।
আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনা সদর থানার ওসি মু. ফয়সাল বিন আহসান বলেন, রাতে আবাসিক হোটেল থেকে হাসানকে নারীসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি বাইরে আছি, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধী মামলায় কাদের মোল্লা ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে রক্তাক্ত এক জনপদে পরিণত হয়েছিল পুরো সাতক্ষীরার। সেসময় সরকার বিরোধী আন্দোলনে একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৭ আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন অবরোধকারীদের হামলায়। সেসময় তালা উপজেলা ছাত্র শিবিরের সক্রিয় সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্বে ছিলেন পাটকেল ঘাটা তৈলকুপির মোসলেম উদ্দীন সরদারের ছেলে হাসানুর রহমান হাসান ওরফে মিনিস্টার হাসান। সরকার বিরোধী নাশকতা বিশৃঙ্খলার সব ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি।
পুলিশের তথ্য মতে হাসানের নামে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় ৩/৬ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ২০১৮ সালে ৮নং মামলা, একই ধারায় সাতক্ষীরা সদর থানায় ২০১৯ সালে ৩৩নং মামলা, পাটকেলঘাটা থানায় ২০১৩ সালে ৮নং ও ৪নং মামলা রয়েছে বলে জানাযায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একব্যাক্তি জানান, এক ছাত্র শিবিরের সভাপতি গ্রেফতার হওয়ার পর শিবিরের যে লিকুইড মানি ছিল সেটি পাটকেলঘাটার হাসানের কাছে দিয়ে যায় সংগঠন চালানো ও আন্দোলন সংগ্রামের খরচের জন্য। এখনও পর্যন্ত সেইসব অবৈধ টাকা দিয়ে পুরো সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র শিবিরের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে হাসান ও তার সহযোগীরা।
এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছে হাসান বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে মিটিং ও গোপন বৈঠক পরিচালনা করে আসছে।
তালা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, হাসান সারা জেয়ায় জামায়াত-শিবিরের নেতৃত্ব দিচ্ছে। সে শিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার ও একাধিক নাশকতা মামলার আসমি। তার প্রতিটা কাজ অসামাজিক এবং রাষ্ট্রবিরোধী। আমরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য।
সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, হাসান জামায়াত-শিবিরের একজন পৃষ্ঠপোষক হয়ে এই অঞ্চলে কাজ করে আসছিলেন বহুদিন ধরে। আর্থিক সহায়তা দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করছিলো তিনি। শুধু তালাতে নয় জেলার বিভিন্নস্থানে টাকা দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করার দায়িত্ব পালন করছিলো হাসান। এখন আবার দেখছি সে পর্দাত অন্তরালে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত। অধিক অদন্ত করলে তার বিষয়ে আরও কিছু জানা যাবে। সে যাতে শাস্তির আওতায় আসে সে ব্যাপারে আমরা কথা বলবো।