স্টাফ রিপোর্টার ॥ শহরের আলোচিত রাউফুজ্জামান ওরফে লাদেন বাবুকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গল বার দিবাগত রাতে সাতক্ষীরা শহর থেকে তাকে আটক করেছে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ। আটক রাউফুজ্জামান শহরের মুনজিতপুর এলাকার মৃত আব্দুল মাজেদ মাষ্টারের ছেলে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ।

সূত্র জানায়, শহরের মুনজিতপুর এলাকার হাছিনা চৌধুরির করা একটি মামলায় সে আটক হয়েছে বলে জানা গেছে।খোজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার ইফতারির আগে শহরের মুনজিতপুর গ্রামে মৃত এরশাদ আলীর বসতভিটেতে ছাগল বাধছিলো এরশাদ আলীর পুত্র মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী তানজিলা খাতুন।ছাগলবাধা কে কেন্দ্র করে একই জাগায় বাড়ি মৃত মাজেদ মাস্টার(টুরি মাস্টার)এর ছোট ছেলে রউফুজ্জামান এসে ছাগল বাধতে বাধা প্রদান করেন।

এক পর্যায়ে তানজিলার ননদ হাসিনা চৌধুরী লাদেন বাবুকে বলেন আমার জমিতে আমি ছাগল বাধবো তাতে সমস্যা কি। লাদেন বাবু ও হাসিনা খাতুনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লাদেন বাবু ঘর থেকে দা নিয়ে এসে হাসিনা খাতুনের মাথায় কোপ মারতে যায়।এসময় হাসিনা খাতুন হাত দিয়ে দায়ের কোপ প্রতিহত করতে গেলে হাসিনা খাতুনের হাতে লেখে হাত কেটে যায়।পরে হাসিনা খাতুন মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেরেন।

খোজ নিয়ে আরো জানা যায় হাসিনা খাতুন কে অঞ্জান অবস্থায় ভ্যান যোগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান হাসিনা খাতুনের ভাবী তানজিলা খাতুন ও তার ভাইজি জামাই আজিজুর রহমান (ছোট)।সদর হসপিটাল থেকে হাসিনা চৌধুরীর হাতে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়।হাসিনা খাতুনের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় লাদেন বাবুর কোপ মারার বিষয়টি মোবাইল যোগে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন কে জানানো হয় এবং হাসিনা খাতুন কে অসুস্থ অবস্থায় সদর সার্কেল কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে সেখান থেকে হাসিনা খাতুনের স্বজনরা সাতক্ষীরা থানায় গিয়ে একটি এজাহার দায়ের করেন।

পরে একই দিন মধ্যরাতে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে সদর থানার এসআই নুর আলম অভিযান চালিয়ে রউফুজ্জামান অরফে লাদেন বাবু কে আটক করতে সক্ষম হয়।

আটকের বিষয়টি সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান নিশ্চিত করে বলেন রউফুজ্জামান অরফে লাদেন বাবুকে হাসিনা খাতুনের দায়ের করা মামলার আটক করা হয়েছে এবং তাকে বিঞ্জ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ওসি আরো বলেন রউফুজ্জামান লাদেন বাবুর আটক হওয়ার সুযোগ নিয়ে যদি কোন পক্ষ তাদের গোবর দড়ির  জমি দখল করতে যায় তাহলে সেই দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এদিকে রউফুজ্জামান অরফে লাদেন বাবুর গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।এলাকার একাধিক ভুক্তভোগীরা জানান, লাদেন বাবু কখনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ে অবৈধ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে প্রশাসনের কাছ থেকে(অথচ লাদেন বাবুর পিতা মাজেদ মাস্টার কখনো আ’লীগ করেন নি)  , আবার কখনো ঈমাম পরিষদের সাধারন সম্পাদক আবার কখনো মানবাধিকার চেয়ারম্যান আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চলেন।একাধিক ভুক্তভোগী আরো জানান লাদেন বাবুর অবৈধ সুদের টাকার গরমে ও ক্ষমতার দাপটে আজ পর্যন্ত কেউ তার বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পায়নি বা কোন পুলিশ মামলা নেন নি।

মুনজিতপুর সহ সাতক্ষীরা জেলার লাদেন বাবু কতৃক হয়রানির স্বীকার হওয়া জনগণ সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার),পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন ও সাতক্ষীরা থানার ওসি মোঃ আসাদুজ্জামানের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।

প্রাসংঙ্গত এর আগে চলতি মাসের ২ মে রউফুজ্জামান অরফে লাদেন বাবু জমি জাগা সংক্রান্ত বিষয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় এরশাদ আলীর পরিবারের পুরুষ মহিলা সহ মোট ১১ জনের নামে মামলা দায়ের করেন সাতক্ষীরা সদর থানায়। সেই ঘটনার সত্যতা জানতে ছায়া তদন্তে নেমেছেন সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিনের নেতৃত্বে সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃআসাদুজ্জামান ও তদন্তকারী অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান। মামলা দায়ের করার ১০ দিন যেতে না যেতেই মরহুম এরশাদ আলীর কণ্যা হাসিনা খাতুনের উপরে গতকাল সোমবার ইফতারের আগে হামলা করেন রউফুজ্জামান অরফে লাদেন বাবু।

 

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন