র‍্যাবের হাতে আটক বহুল বিতর্কিত হেলেনা জাহাঈীর খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের বিব্রত করতেন বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকালে কুর্মিটোলা র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব সদর দফতর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এই অভিযান চালায়।

‘অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, একটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, একটি হরিণের চামড়া, দু’টি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, দু’টি ওয়াকিটকি সেট এবং ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম ৪৫৬টি চিপস উদ্ধার করা হয়। পরে মধ্যরাতে তার জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশনেও অভিযান পরিচালনা করা হয়।’

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের বিব্রত করতেন। অনৈতিক পন্থায় সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে খ্যাতনামা হিসেবে উপস্থাপন করতে চতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করতেন। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তিনি একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করতেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, তিনি (হেলেনা) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ ও উত্ত্যক্ত করতেন। পরবর্তী সময়ে ফোন করে তাদেরকে হেয় করতেন। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন।

এছাড়া হেলেনার সঙ্গে অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত বাংলাদেশি নাগরিক সেফুদার নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

খন্দকার আল মঈন বলেন, সেফুদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীর নজর কাড়তে চেষ্টা করেন। তার সঙ্গে গ্রেফতারকৃত হেলেনার নিয়মিত যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।

র‌্যাব জানায়, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া মাদক, বিদেশি মুদ্রা ও বন্যপ্রাণীর চামড়া জব্দের ঘটনায় আলাদা আলাদা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া ‘জয়যাত্রা’ নামক টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালনার কারণে আলাদা মামলা হবে বলে জানান র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র‍্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র‍্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন