খুলনা বি-সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খান অবিভাবকদের উদ্যেশে বলেছেন ১৮ বৎসরের আগে কোন কিশোর-কিশোরীর হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দেওয়া যাবেনা। তিনি বলেন কিশোর-কিশোরীরা প্রাইভেট পড়তে যায়, স্কুলে যায় সেজন্য অবশ্যই তাদের কাছে মোবাইল ফোন থাকা দরকার। এজন্য তাদের হাতে বাটোন সুইজের মোবাইল ফোন দিতে হবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দেওয়া যাবেনা।
সজিব খান বলেন ১৮ বৎসরের নিচে যারা আছেন তাদের দেখবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা অনেকখানি কম। তারা না বুঝেই অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পোষ্টে লাইক দেয়, শেয়ার করে ফলে অনেক সময় তারা অপরাধের মধ্যে পড়ে যায়।
উদাহরণ স্বরুপ সজিব খান বলেন, সম্প্রতি দেখবেন লবণ নিয়ে একটি গুজব ছড়ানো হয়েছিলো তাতে আমরা বেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলাম,তিনি বলেন প্রায় ৪৮ ঘন্টা লবণের বাজারে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হয়। তিনি উদাহরণ দিয়ে আরো বলেন, কিছু দিন আগে পদ্মা সেতু তে বাচ্চা দের মাথা লাগবে বলে গুজব প্রচার হয়েছিলো সেটিও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানেের কারনে গুজব ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।তিনি বলেন, কিশোর-কিশোরীরা না বুঝেই এসব গুজব গুলো শেয়ার করে যার ফলে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অপরাধী বলে শনাক্ত হয়। এজন্য খুলনা জেলা পুলিশ শহর ও গ্রামের প্রত্যেকটি স্কুল – কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে গুজব বিরোধী সচেতনতা মুলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা বেতারে অনুষ্ঠিত নারী ও শিশু উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় শীর্ষক অনুষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীর বিষয়ক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞ হিসাবে খুলনা বি- সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃসজব খান উপরোক্ত কথা গুলি বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ হিসাবে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভোলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী হুমায়ন কবির এবং স্রোতা বন্ধু হিসাবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিএল কলেজের অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্রী ইয়াসমিন নাহার। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্রোতারা অনুষ্ঠানের উপস্থাপকের কাছে ফোন দিয়ে বলেন ১৮ বৎসরের নিচে কিশোর-কিশোরীদের হাতে অ্যানরাইড ফোন দেওয়া নিষেধ এটা সংসদে আইন পাস করা হলে আমদের সন্তানরা অনেক উপকৃত হবেন বলে দাবী জানান ।স্রোতাদের ফোনের উত্তরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খান বলেন,আমরা যখন সাইবার ক্রাইমে অপরাধী শনাক্ত করার চেষ্টা করি তখন আমরা ব্যবহারকারীর সিমের নাম্বার ও ব্যবহার কারীর র ভোটার আইডি নাম্বার দিয়ে সার্স করে অপরাধী শনাক্ত করি।
তিনি বলেন, আমার অফিসে অনেকে এসে বলেন, স্যার এ আইন সম্পর্কে আমি জানতাম না এটা করলে এমন শাস্তি হবে,আমি এখন কি করবো? সজিব খান আরো বলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় অপরাধ করলে তার জন্য আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রয়েছে, পণ্যগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, তথ্য প্রযুক্তি যোগাযোগ আইন-২০০৬ আছে, অনেকে না জেনে, না বুঝে এসব অপরাধের বেড়াজালে জড়িয়ে যায়। তিনি তাদের উদ্যেশ্যে বলেন, আমি আইন না জেনে অপরাধ করে ফেলেছি এটা কোন অজুহাত হতে পারেনা। তিনি বলেন আপনার বয়স যদি ৯ বৎসর + হয় আর আপনি যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটান তাহলে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।
অনুষ্ঠানের অপর বিশেষঞ্জ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভোলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী হুমায়ন কবির বলেন আমাদের সন্তান রা এখন মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলেনা,ভলিবল খেলেনা তারা মোবাইল নিয়ে ভিডিও গেম খেলে কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় পায় না ফলে তাদের মেধা বিকাশ ঐ স্টার্ম ফোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।এজন্য অবিভাবকের প্রতি আমাদের অনুরোধ আপনারা আপনাদের সন্তান দের ১৮ বৎসরের আগে অ্যানরাইড ফোন দিবেন না এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো দিক ও খারাপ দিক সম্পর্কে আপনার সন্তান কে অবগত করুণ।