♣♣♣♣
ট্রাফিক সপ্তাহের অষ্টম দিনে সাতক্ষীরায় চলছে অবৈধ যানবহণের বিরুদ্ধে নজির বিহিন অভিযান।সেখানে কোন অন্যায় তদবীর খাটছেনা।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,তদবীর করলেই মামলা অবধারিত। এমতাবস্থায় মাথায় হেলমেট,মটর সাইকেলের রেজিষ্টেশন,ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইন্সুরেন্স সহ চালক দের সকল পেপার্স দেখাতে ব্যর্থ হলে মামলা দিয়ে দেচ্ছেন জেলা ট্রাফিক পুলিশ।
রবিবার ১২ ই আগষ্ট ২০১৮ তারিখ বেলা ৩ ঘটিকার সময় শহরের কোল্ডস্টোর মোড়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মইনুদ্দিন এঁর সার্বিক তত্বাবধানে সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেন।অভিযানে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ ও ইটাগাছা ফাঁড়ির পুলিশ ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে সহযোগীতা করেন।এসময় ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট জনাব মোশারাফ হোসেন রাস্তায় চলমান মটর সাইকেল,বাস,ট্রাক ও বিভিন্ন থ্রি হুইলার যানবহনের মালিক দের দাড় করিয়ে তাদের যানবহনের যাবতীয় কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই করেন।কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করার এক পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনার খুলনা অনুমোদিত সাতক্ষীরার সিটিজেন জার্নালিস্ট ও আপডেট সাতক্ষীরা ডটকমের পরিচালক জিমি কে সিগন্যাল দেন ট্রাফিক পুলিশ।এসময় সিটিজেন জার্নালিস্ট ট্রাফিক সার্জন কে পরিচয় দেন আমি আপডেট সাতক্ষীরা ডটকমের পরিচালক।
সিটিজেনের কথার উত্তরে ট্রাফিক সার্জন মোশারাফ হোসেন বলেন,আপনি সাংবাদিক হন আর যাই হন না কেন? গাড়ির যাবতীয় পেপার্স দেখিয়ে চলে যান।তিনি আরো বলেন,আমাদের এসপি স্যার পুলিশের মাথায় হেলমেট ও গাড়ির কাগজ না থাকলে পুলিশকেও ছাড় দিচ্ছেন না।পরে সিটিজেন জার্নালিস্ট তার ব্যক্তিগত ড্রাইভিং লাইসেন্স,গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের স্মার্ট কার্ড ও ইন্সুরেন্স দেখালে ট্রাফিক সার্জেন্ট মোশারাফ হোসেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সিটিজেন জার্নালিস্ট কে ধন্যবাদ জানান।
প্রাসংঙ্গতঃ
নিরাপদ সড়কের দাবীতে সাতক্ষীরা শহরে তিনটি স্পটে ট্রাফিক সপ্তাহ চলছে। সপ্তাহ শেষে জেলার ট্রাফিক ১ হাজার ৮৫ টি বিভিন্ন অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। সাধারণ মানুষের মধ্যে আইন মানার প্রবনাতা তৈরি হলেও ব্যতিক্রম ছিলো কিছু মানুষ। অন্যদিকে, ট্রাফিক পুলিশকে দিনভর সহযোগিতা করেছে রোভার স্কাউট ও বিএনসিনি। গতকাল বেলা ১টায় ট্রাফিক সপ্তাহ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন ও পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান। এ সময় তারা সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ট্রাফিক সপ্তাহ আরো ৩ দিন বর্ধিত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ শুরুর পর ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও চালকের বিরুদ্ধে মামলার হার দ্বিগুণ হয়েছে। সাতক্ষীরায় গতকাল মামলা হয়েছে ১৩৯টি। ৫ আগষ্ট থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহের প্রথম দিনেই মামলা হয় ১৪২টি। ৬ আগষ্ট ১৯০টি, ৭ আগস্ট ১৮১টি, ৮ আগস্ট ১৬১টি, ৯ আগস্ট ১২৬টি, এবং ১০ আগস্ট ১৩৯টি মামরা হয়েছে। তবে এর সাথে জেলার ৮ থানা ও সকাল থানার পুলিশ ফাঁড়িও অভিযান পরিচালনা করেন।
সূত্র আরো জানায়, ট্রাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা গতকাল সকাল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ট্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কাউট দলের সদস্যরাও এতে সহযোগিতা করেছেন। শহরের আমতলা মোড়ে, লাবনী মোড়ে এবং খুলনা রোড় মোড়ে যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করতে দেখা যায়। এসব সড়কের পাশে বাস, কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলেন, এসব গাড়ির কোনোটির ফিটনেস, কোনোটির চলাচলের অনুমতি (পারমিট), আবার কোনোটির রেজিস্ট্রেশন নেই।
সূত্র আরো জানায়, গতকাল বেলা ১ টায় ট্রাফিক সপ্তাহ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন ও পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মোমিন হোসেন, সার্জেন্ট মোশাররফ হোসেন, শরিফুল হাসান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ রোভার স্কাউটের প্রাক্তন সিনিয়র রোভার মেট আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা সিনিয়র রোভার মেট প্রতিনিধি ইয়াছিন আলী, সরকারি কলেজের সিনিয়র রোভার মেট আরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, রোভার মেট আজিমুল হোসেন, হাবিবুল্লাহ, মামুন, প্রাক্ত, প্রভা প্রমুখ।
সূত্র আরো জানায়, গতকাল খুলনা রোড মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে ছয় থেকে ৮/৯ ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। অন্যদিকে প্রায় ২০ জন রোভার স্কাউট এই মোড়ে পুলিশকে সহায়তা করছে। যারা রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। শুধু মোড়ে নয় সিগন্যালে এসে গাড়িগুলো সঠিক লেনে আছে কিনা, বাম দিক দিয়ে যেসব গাড়ি বেরিয়ে যাবে তারা দিক নির্দেশক বাতি জ্বালিয়ে চলছে কিনা, পথচারীরা জেব্রাক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করছে কিনা, বাইকের হেলমেট, মোটরযানের বৈধ কাগজপত্রসহ ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা, অ্যাম্বুলেন্স আটকে আছে কিনা। এধরনের সব প্রশ্নের উত্তর নেওয়ার মাধ্যমে রাস্তার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত ও নিয়মতান্ত্রিক রাখছে তারা।
রোভার স্কাউটরা জানান, আমরা এই কয়দিনে মানুষকে কিছুটা অভ্যস্ত করতে শিখিয়েছি। কিন্তু যাদের শেখাচ্ছি তারা আবার রাস্তায় পরবর্তীতে এলেই নিয়ম ভাঙতে চেষ্টা করে। যদিও তারা এর আগে নিয়ম ভেঙে জরিমানা দিয়েছে। তাই জনসচেতনার চেয়ে রাস্তায় মানুষকে এ ধরনের নিয়ম মানতে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। এ কারণে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এই অল্প সংখ্যক পুলিশ দিয়ে হবে না।
ট্রাফিক সপ্তাহ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন ও পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান সন্তোষ প্রকাশ করেন এ ধারা অব্যাহত রাখার অঙ্গিকার করেন।