Citizen Journalist(জিমি):
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাপা নেতা মোশাররফ হোসেন হত্যার সাথে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে বিচারের কাঠগড়ায় তুলবার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মর্সূচি পালন করেছে জাতীয় পার্টি। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টি মাঠে থাকবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা। দেশের দক্ষিনাঞ্চলে এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যাকান্ড একের পর এক সংঘটিত হচ্ছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন আর কোনো খুন খারাবি যাতে না হতে পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। এ বিষয়ে তারা আইনশৃংখলা বাহিনীকেও সতর্ক থাকার আহবান জানান। বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত দুই ঘন্টার মানববন্ধনে বক্তারা জোর দিয়ে বলেন মোশাররফের ঘাতক ও নেপথ্য মদদদাতাদের খুঁজে বের করতেই হবে। তারা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার দাবি জানান। ঘাতকদের চিহ্ণিত করতে ও গ্রেফতারে জাতীয় পার্টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে উল্লেখ করে তারা বলেন এই হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সবাই নিরাপত্তাহীনতায় থাকবো। মানববন্ধনে জাপা নেতারা বলেন বারবার নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনকে নৃশংসভাবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার পরও ঘাতকরা তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এখন পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদের পূর্ন নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন আর কোনো অনাকাংখিত ঘটনা ঘটালে তাদের রেহাই দেওয়া হবে না। জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ আজহার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় তথ্য উপদেষ্টা সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দীদার বখত। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু, যুগ্ম সম্পাদক খালিদুর রহমান, তালা উপজেলা সভাপতি সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, কালিগঞ্জ উপজেলা জাপা সভাপতি মো. মাহাবুবুর রহমান, সাতক্ষীরা শহর জাপা সম্পাদক আনোয়ার জাহিদ তপন, কলারোয়ার সম্পাদক আবদুল্লাহ আলিম বাবু, শ্যামনগরের সভাপতি ও সম্পাদক এড. আবদুর রশীদ ও মো. কামরুজ্জামান, জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি আকরামুল ইসলাম ও সম্পাদক কায়সারুজ্জামান হিমেল, ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন বাপি, যুব সংহতির সভাপতি সাখাওয়াতুল করিম পিকুল, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পার্টি নেতা রাজীবউল্লাহ প্রমুখ। মানববন্ধনে সৈয়দ দীদার বখত বলেন আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। ঐক্যবদ্ধ থাকলে ঘাতকরা পার পাবার সুযোগ পাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতার নেত্রী হিসাবে আখ্যায়িত করে সৈয়দ দীদার বখত বলেন, দেশের জন্য অনেক উন্নয়ন কাজ করেছেন আপনি। দেশকে উন্নয়নশীল থেকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করার পথও পরিস্কার করেছেন আপনি। কিন্তু আপনার সব উন্নয়ন ভাবনা ম্লান হয়ে যাবে যদি না এ ধরনের হত্যার বিচার না হয়। এই হত্যার সাথে ক্ষমতাসীন দল জড়িত থাকলেও তাদের ক্ষমা করবেন না । তারা যেনো কোনো রাজনৈতিক আশ্রয় ও আসকারা না পায় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। দীদার বখত বলেন আমরা সংসদে আছি, রাজপথেও আছি। আমাদের প্রিয় নেতা মোশাররফ হত্যার বিচার না নিয়ে ঘরে ফিরবো না। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু এরশাদ বলেছেন ‘তোমরা এলাকায় যাও, শান্তিপূর্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ন্যায় বিচার আদায় করো উল্লেখ করে সৈয়দ দীদার আরও বলেন যতোদিন বিচার না হবে ততোদিন আমরা মাঠে থাকবো। চেয়ারম্যান মোশাররফ যে কতো জনপ্রিয় ছিলেন তার এই মৃত্যুই তা প্রমান করে। সাতক্ষীরা জেলা জাপা সভাপতি শেখ আজহার হোসেন বলেন আমরা ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি দিতে মাঠে থাকবো। খুনি ডাকাতরা কয়েকদিন ধরে তাকে অনুসরণ করে এই নৃশংস হত্যা ঘটিয়েছে। তারা রক্ষা পাবে না। জাপা জেলা সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু বলেন শুধু ঘাতকরাই নয় এই হত্যার মদদদাতা ও পরিকল্পনাকারীদেরও গ্রেফতার করতে হবে। আমরা রাজপথ ছাড়ছি না। জেলা জাপার সহ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন আমরা হঠকারি রাজনীতি করিনা। আমরা শান্তি শৃংখলার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। অন্যান্য নেতারা বলেন যারা চেয়ারম্যান মোশাররফের স্ত্রীকে বিধবা করেছে, যারা তার মেয়েকে পিতৃহারা করেছে তাদের ক্ষমা নেই। জনতার আদালতেও তাদের বিচার করা হবে। এর আগে জাতীয় পার্টি নেতা কর্মীরা এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। উল্লেখ্য যে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান জেলা জাতীয় পার্টির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম মোশাররফ হোসেন গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে কৃষ্ণনগর বাজারে যুবলীগ অফিসে বসে থাকাকালে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার পর পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত নেট।