ঘটনার দীর্ঘ ১৪ বছর পর বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নৃশংস গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা জারি করা হয়েছে রাজধানীসহ সারা দেশে।
মামলার অভিযোগপত্রে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম থাকায় এবং রায়ে তার সাজা হলে নাশকতার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঝটিকা মিছিল এমনকি ব্যাপক তাণ্ডব চালাতে পারেন— এমন খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ ও র্যাব সদর দফতর থেকে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা।
আজ থেকে রাজধানীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে থাকছে বিশেষ কড়াকড়ি। রায়ের আগে ও পরে সারা দেশে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। যদিও রায় ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার ঢাকা ক্লাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, দেশের জনগণ এ মামলার রায়ের জন্য অধীর আগ্রহে রয়েছে। এ রায়ের মাধ্যমে জাতি একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হবে। ওই নৃশংস গ্রেনেড হামলার বিচার মানুষ দেখতে চায়। তাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে দেশে কোনো বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা নেই।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা দুই মামলার রায় ঘোষণার জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল। ১৮ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার ১ নম্বর অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন। আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
উক্ত মামলার ৫২ আসামির মধ্যে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিণ্টু, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ডিউক।
মুফতি মোহাম্মদ হান্নানসহ তিন জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য মামলায়। ফলে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হবে ১০ অক্টোবর।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান বলেন, রায় ঘোষণা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কেউ যদি এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় তাহলে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মনিরুজ্জামান গণম্যামকে জানায়, ১০ অক্টোবর বড় ধরনের একটা মামলা রায়ের দিন। এ দিনে যে কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে এসব মোকাবিলায় পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা নজরদারি ছাড়াও বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। নিরাপত্তা তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সুত্রঃ দৈনিক সাতক্ষীরা ডটকম।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন