চলছে পুলিশ সপ্তাহের তৃতীয় দিন। পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) বার্ষিক সমাবেশ ও আনন্দমেলা ২০২০।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুনাক বার্ষিক সমাবেশ ও আনন্দমেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগম লুৎফুল তাহমিনা খান, ড. রুবানা হক সভাপতি, বিজিএমইএ। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন পুনাকের সভানেত্রী হাবিবা জাবেদ।

পুনাকের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, পুনাক একটি বড় প্রতিষ্ঠান। তারা নারীদের উন্নয়নে অনেক কাজ করছে। কয়েক মাস আগে আমি পুনাকের একটি আউটলেট ভিজিট করেছিলাম। তারা অসাধারণ হ্যান্ডমেড এর কাজ করে। আমার প্রস্তাব থাকবে আপনাদের প্রোডাক্টগুলো রপ্তানিমূখী করতে পারলে আর্থিকভাবে পুনাক অনেক লাভোবান হবে। বর্তমানে আপনারা শাড়ির ওপর ডিজাইন করছেন। বিদেশে স্কার্ফের বিশাল বড় মার্কেট রয়েছে। যদি আমরা কোনভাবে আপনাদের প্রতিভাকে আমাদের রপ্তানির কোন একটি সাইটে যুক্ত করতে পারি তাহলে অর্থনৈতিক উন্নতি দ্রুত বাড়া সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে বিজিএমইএ ও আমি ব্যক্তিগতভাবে পুনাককে সহযোগিতা করবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রী বেগম লুৎফুল তাহমিনা খান বলেন, পুনাক নারীদের সাবলম্বী করতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে নারীরা সাবলম্বী হয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নারীরা কোন অংশে পিছিয়ে নেই। সবক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সকল সফলতার মূলে চালিকা শক্তি পরিবার। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বাংলাদেশ পুলিশ পরিবার নিয়ে পরিবারের কল্যাণে পুনাক কাজ করছে। আমি জেনেছি পুনাক দেশের ৪৭টি জেলায় সক্রিয়ভাবে নারীদের উন্নয়নে ও শিশুদের বিকাশে কাজ করছে। একটি পরিবারের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে মা। মা যখন স্ব-নির্ভর , আত্মপ্রত্যয়ী হতে পারে তখন সে সুযোগ তার পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করে। পুলিশ বাহিনীতে আমাদের নারী পুলিশ দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে প্রত্যেক নারীকে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। অনেক মহিলা সমিতির উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করাটা অতটা সহজ হয় না। যদি তারা উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত না করতে পারে তাহলে তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে। পুনাকের সর্বাত্মক মঙ্গল কামনা করছি।

সভাপতির বক্তব্যে পুনাকের সভানেত্রী হাবিবা জাবেদ বলেন, বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ, বদলে যাচ্ছি আমরাও। পুলিশের মান-সম্মান, উন্নতি-অবনতি, সুনাম-দুর্নাম এর পেছনে ছায়াসঙ্গী হিসেবে স্ত্রীদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। আপনারা নিজ জায়গা থেকে সকলে পজিটিভ রোল প্লে করুন। জীবনে সুখী হতে বেশি কিছু লাগে না। বেঁচে থাকার অর্থ সাফল্য নয়। বেঁচে থাকার অর্থ সুখী হওয়া, সফল ও স্বার্থক হওয়া। সুখী ও স্বার্থক হওয়ার সাথে সম্পদ কিংবা অর্থের কোন সম্পর্ক নেই। এটা আত্মীক বিষয়। মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে মানুষকে দিতে হবে। আপনার যতটুকু আছে ততটুকু দিয়ে এগিয়ে আসুন। অনুষ্ঠানকে যারা সফল ও স্বার্থক করতে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। সেই সাথে আজকের অনুষ্ঠানের মাননীয় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় তাঁরা আজকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন।

পুনাকের আয়োজন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশনা করে পুনাকের শিল্পীরা। প্রধান অতিথি পুনাক পরিবারের সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি, কোরআন তোলোয়াত, সংগীত, চিত্রাংকন, নৃত্য, আবৃতি, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন কাজে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কৃত করেন।

এসময় পুনাকের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য, সদস্যগণ এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পুনাকের জেলা সভাপতি ও সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে পুলিশ সপ্তাহ ২০২০ মেলায় স্টল প্রদর্শনীতে  দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করেছেন সাতক্ষীরা পুনাক। মেলায়  দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করায় ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) সাতক্ষীরা পুনাক সভানেত্রী মিসেস নাদিয়া আফরোজের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন