সাতক্ষীরা শহরে কমেছে চুরি, ছিনতাই, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদসহ অপরাধ মুলক কর্মকান্ড। সেই সাথে বেড়েছে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বলেন, আমি একটি বিপদে পড়ে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি মনোযোগ সহকারে আমার অভিযোগ শুনেছেন এবং আমার সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন।

সদর উপজেলার এক জনপ্রতিনিধি  বলেন, কিছুদিন পুর্বেও জেলায় পুলিশের ছামারি  বাণিজ্য ছিল। বর্তমানে পুলিশের সেই অপরাধ প্রবণতা মোটে নেই বল্লেই চলে। এ ধারা অব্যহত থাকলে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়বে। বর্তমানে কোনো থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জিডি, ভেরিফিকেশন, মামলা দায়ের করতে টাকা লাগছে না।

জেলার আটটি থানার ডিউটি অফিসারের কার্যালয়ে বড় সাইনবোর্ড আকারে টানানো আছে থানায় মামলা-জিডি করতে কোন টাকা লাগেনা। সাইনবোর্ডে আরো লেখা আছে থানায় কাঙ্খিত সেবা না পেলে কতৃপক্ষ কে জানান।সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার প্রায় ২০০ টির মত হারানো মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিক দের হাতে বিভিন্ন সময়ে তুলে দিয়েছেন সাতক্ষীরার ক্রিয়েটিভ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।

কিছুদিন আগে কনকনে শীতে কষ্টে থাকা এক বৃদ্ধ মহিলা বলেন হাড়কাপনো শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম। পরে মাইকিং শুনে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্সে গিয়েছিলাম। সেখানে পুলিশ সুপার মহোদয় আমাকে একটি নতুন কম্বল দিয়েছিলেন।কিন্তু একটি কম্বলে আমার ও আমার স্বামীর শীত নিবারন হবে না বলে আমি বড় সাহেবের কাছে আর একটি কম্বল চেয়েছিলাম।

বৃদ্ধ মহিলা আরো বলেন তার কয়েক দিন পরে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্স মাঠে গেলে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি  (পুলাক) সভানেত্রী ও সাহেবের স্ত্রী আমাকে আরো দুটো কম্বল দিয়েছিলেন। যার কারনে আমি এ বছর শীতের কষ্ট থেকে রেহাই পেয়েছি।পরে বৃদ্ধ মহিলা পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই যোগদানের পর থেকেই তিনি মাদক, সন্ত্রাস ও পুলিশের গ্রেফতারি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিরদ্ধে জিরো টলারেন্স  ঘোষণা করেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা শুধু শহরেই নয়, গ্রামের মানুষের কাছেও তিনি সমান প্রিয় ব্যক্তিত্ব।

কয়েক মাস আগে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের উগ্যোগে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্সের ড্রিল সেটে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রায় ৮০ জন এমবিবিএস ডাক্তার দের দিয়ে সাতক্ষীরার প্রায় ১ হাজার মানুষ কে ফ্রি চিকিৎসা ও বিনা মুল্যে ঔষধ দিয়েছিলেন এসপি মোস্তাফিজুর রহমান।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ  সুপার মোহাম্মদ  মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) বলেন,মুজিববর্ষের অঙ্গিকার,পুলিশ হবে জনতার “এ শ্লোগান নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন,  আমরা চেষ্টা করি মানুষের বন্ধু হিসেবে থেকে তাদের সেবা করতে, তবে অপরাধীদের নয়।তিনি আরো জানান  জেলার মানুষের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা। কোনো বিপদে পড়লে, কোনো পুলিশ হয়রানি করলে, পুলিশি সেবা পেতে অর্থ চাইলে সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমি ব্যবস্থা নেব।

শহরের এক প্রভাবশালী সাংবাদিক বলেন সাতক্ষীরার মাটিকে সম্প্রতি কিছু চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। যেমন – কালিগঞ্জের বিকাশে ২৬ লাখ টাকা ছিনতাই এবং দুই  ছিনতাই  কারীর এনকাউন্টার ও মাস্টার মা’ইন্ড গ্রেপ্তার, আশাশুনি ও কালিগঞ্জে দুই হত্যা মামলায় ৭২ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন ও প্রধান আসামি আটক, পাটকেলঘাটায় শিশু শাহিনের ছিনতাই হওয়া ভ্যান উদ্ধার ও আসামি আটক, সাতক্ষীরা শহরের কুকরালী দহাখুলায় বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করে বাগানে পুতে রাখা মামলার লাশ উদ্ধার ও প্রধান আসামি আটক ইত্যাদি চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি আটক করে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) দেশ ব্যাপি প্রশংসা অর্জন করেছেন। যেটি জাতীয় দৈনিক সহ এটিএন বাংলা, এনটিভি ও এসএ টিভিতে প্রশংসা আকারে প্রচার করা হয়েছিল।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সেবা নিতে যাওয়া এক বৃদ্ধ জানান আমি গরীব মানুষ লুঙ্গিপরে আর টায়েরের স্যাল্ডেল পরে গিয়েছিলাম পুলিশ সুপারদের সাথে দেখা করতে। এসময় অভ্যর্থনা কক্ষে প্যাটসার্ট পরা গাড়ি চড়ে আসা এক ভদ্রলোক বসে ছিলেন পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু পুলিশ সুপার মহোদয় আমি গরীব মানুষ লুঙ্গিপরে এসেছি বলে উনার আগে আমাকে কক্ষে ডেকেছিলেন এবং আমার কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করেছিলেন।

এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন চিকিৎসার সাহায্যের আবেদন দেখলে সোজা হাসপাতালে ছুটে চলে যান সেই অসহায় রোগীকে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করতে। শুধু তাই নয় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী গরিব বিশ্ব বিদ্যালয়ে চাঞ্চ পেয়েছেন অথচ টাকার জন্য ভর্ত্তি হতে পারছেন না এমন লোকজন পুলিশ সুপারের কাছে গেলে তিনি খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না। বরং ঐ শিক্ষার্থীকে নতুন এক সেট বই কিনে দেন পুলিশ সুপার সাথে নগত অর্থ ও প্রদান করেন এই মানবিক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।

তাছাড়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার  প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুলি ঘূর্ণীঝড় সহ নানা রকম দূর্যোগে সাতক্ষীরার মানুষের পাসে খাদ্য,ঔষধ ও বস্ত্র নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাসে দাঁড়িয়েছেন।সাথে সাথে লবন গুজব, পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে গুজব ইত্যাদি গুজবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে সকল গুজব কে প্রতিরোধ করেছেন। তাই পরিবর্ষে বলা যায়, মুজিববর্ষের অঙ্গিকার, সাতক্ষীরার পুলিশ এখন জনতার।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন