মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’ এ স্লোগানে মুজিববর্ষ পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ। এ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানায় চালু হবে বিশেষ ‘হেল্পডেস্ক’।
নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের দ্রুত এবং সহজে আইনি সহায়তা দিতেই এ উদ্যোগ। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে প্রস্তুতিও শেষ করেছে পুলিশ সদর দফতর। বিশেষ এ হেল্পডেস্কে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।
ডেস্কটি এমনভাবে সাজানো হবে- যাতে ভুক্তভোগীরা সহজেই তাদের অভিযোগের বিষয়ে মন খুলে কথা বলতে পারেন। একই সঙ্গে অভিযোগ পাওয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। এছাড়া সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে ‘সেবা সপ্তাহ’ পালন করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে বড় এ বাহিনী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ পালনের বিষয়ে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।
সভায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানায় ১৭ মার্চ থেকে ‘হেল্পডেস্ক’ খোলার সিদ্ধান্ত হয়। ইতিমধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে এবং হেল্পডেস্ক পরিচালনার জন্য প্রতিটি থানায় নারী পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, দেশে অনেক নারী পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন। সেসব নারী অভিযোগ করার জন্য থানায় যান। কিন্তু সেখানে পুরুষ পুলিশ সদস্য অভিযোগ নেয়ার দায়িত্বে থাকায় নারীরা নির্যাতনের বিষয়টি খুলে বলতে অনেক ক্ষেত্রেই ইতস্তত করেন।
ফলে মামলা লেখার ক্ষেত্রেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ পড়ে যায়। এতে আইনের মারপ্যাঁচে আদালত থেকে অভিযুক্তরা মুক্তি পেয়ে যান। এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে মুজিববর্ষ থেকেই দেশের প্রতিটি থানায় বিশেষ হেল্পডেস্ক স্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশের প্রায় ৭০০ থানার ওসিকে পুলিশ সদর দফতরে ডেকে পাঠানো হয়। বিশেষ হেল্পডেস্ক চালুর বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। এ ব্যাপারে তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয় এবং সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের ইমেজ বাড়াতে আমরা কাজ করছি। থানা হবে মানুষের আশ্রয়স্থল। ভুক্তভোগীরা সর্বপ্রথম সাহায্যের জন্য থানায় আসেন। থানার অফিসারদের আচার-আচরণ ও ব্যবহারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি পৌঁছাতে হবে। সর্বোত্তম সেবা দিতে হবে।
আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই, মানবিক পুলিশ হতে চাই।’ এ কারণে ‘মুজিববর্ষে’ পুলিশের পক্ষ থেকে সেবা সপ্তাহ পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, দেশের অনেক থানা আছে, যেগুলোতে নারীদের কাছ থেকে অসংখ্য অভিযোগ আসে। অনেক সময় নারীরা তাদের ব্যক্তিগত অনেক বিষয় নিয়ে অভিযোগ করতে থানায় আসেন।
পুরুষ পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে গিয়ে অস্বস্তি বোধ করেন। ফলে নতুন যে ডেস্ক চালু হচ্ছে, তাতে নারীদের বিশেষ সুবিধা হবে।
সূত্র : দৈনিক যুগান্তর নেট।