মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরোয়াভাবে অনুষ্ঠান করতে চাইলে যে কেউ করতে পারবে। তবে সেজন্য আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, এছাড়া নিজেরা কিছু করতে চাইলে নিরাপত্তাবাহিনীকে জানিয়ে করতে হবে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করবো, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবসটি পালন করতে।

আজ সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মহান বিজয় দিবস ২০২০ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নকল্পে যথাযথ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় ভার্চ্যুয়াল সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার , মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম,হেড কোয়াটার্স ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম-বার, পিপিএম-বার  সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্ব আতঙ্কিত।

তারপরও বাংলাদেশের জনগণ কোনো কিছু হলেই রাস্তায় বেরিয়ে আসে, এটা আমাদের স্বভাব। আমরা শত চেষ্টা করেও তাদের ঘরমুখি করতে পারছি না। সেজন্য আমাদের আশঙ্কা মহান বিজয় দিবসের দিন লোকজন ঘরে থাকবেন না। লোকজন বেরিয়ে আসবে। তখন তাদের কীভাবে নিরাপত্তা দেবো, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যারা ঘরোয়া অনুষ্ঠান করতে চান, তারা করতে পারবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে সে বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আগেই জানাতে হবে।

অনুষ্ঠানটি কারা, কোথায়, কীভাবে, কতজনকে নিয়ে করছে এবং কারা কারা সে অনুষ্ঠানে থাকবে এসব আগেই জানাতে হবে। অনুষ্ঠানগুলোতে যাতে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সারাদেশে আমাদের গোয়েন্দারা সক্রিয় থাকবে, পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী কাজ করবে। বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ভবনে মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক মাপ ও নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। পতাকার রঙ, মাপটা যেন সঠিক হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের সব জেলা-উপজেলায় তোপধ্বনি হবে নিয়ম অনুযায়ী। বিভিন্ন স্থাপনায় আলোকসজ্জা হবে, যে যেভাবে চায়, করতে পারবে। অনুষ্ঠান সফল করার জন্য ইউটিলিটি সহযোগিতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইউনিট আকারে সহযোগিতা করবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাতায়াত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। প্রতিবার যেভাবে নেওয়া হয়, সেভাবেই আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের যারা যারা স্মৃতিসৌধে যাবেন, তাদের জন্য প্রতিবারের মতো এবারও যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা বসানোসহ আলোকসজ্জা থাকবে। ঢাকা থেকে সাভার যাওয়ার সব রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিছন্ন রাখার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের যে কোনো উপাসনালয় যেমন মন্দির, মসজিদ, গির্জা ও পেগোডাতে বিশেষ প্রার্থনা ও মোনাজাত হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কমনা করা হবে। একই সঙ্গে বিজয় দিবস উপলক্ষে বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, কারাগার, হাসপাতালগুলোতে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন