বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদের শেকড়-বাকড় উপড়ে ফেলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার)।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এই কথা বলেন।
পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) উদ্যোগে অনলাইনভিত্তিক উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নির্মিত সচেতনতামূলক ওভিসি ও টিভিসি উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আইজিপি বলেন, ‘শেষ জঙ্গিটিও নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এখানে আত্মতুষ্টির কোনো স্থান নেই। বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদের শেষ শেকড়-বাকড়টিও উপড়ে ফেলতে চাই।’
জঙ্গিবাদ মহামারি করোনার মধ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিল উল্লেখ করে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও সামনের সারিতে থেকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে। ভৌগলিকসহ নানাবিধ কারণে জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় বাংলাদেশকে টার্গেট করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স এবং এই দেশের শান্তিপূর্ণ মানুষের জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থানের কারণে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল হয়নি।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা বেশ নাড়া দেয়। তবে এর পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি আমরা বেশ সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করেছি। যে নেটওয়ার্কটি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সেটিকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ডিসমেন্টাল করে দিতে পেরেছি। এমনই একটা প্রেক্ষাপটে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এটিকে একটি রোবস্ট ইউনিট হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য জঙ্গিবাদের এই শকুনের থাবা যেন কোনোভাবেই বিস্তার না করতে পারে।’
সম্প্রতি র্যাবের কাছে ৯ জঙ্গির আত্মসমর্পণ ঘিরে সমালোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ আছে সবসময় নৈরাশ্যবাদী। আমি মনে করি তাদের মানসিক চিকিৎসা দরকার। জঙ্গি আত্মসমর্পণের ঘটনায় অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলার চেষ্টা করছেন, কোথাওতো জঙ্গি নাই, আত্মসমর্পণ করলো কারা? এখন জঙ্গি আছে সেটা প্রমাণের জন্য কি তাদেরকে বোমা ফাটাতে দেব, মানুষ হত্যার সুযোগ দেব? যদি প্রতি মাসে বা সপ্তাহে আমরা জঙ্গি গ্রেপ্তার না করতাম তাহলে দেখতেন। এমন কত-শত জঙ্গি চেষ্টা আমরা সফলই হতে দিইনি।’
দেশে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই জঙ্গিবাদের গোড়াপত্তন-এমন মন্তব্য করে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আমাদের পুলিশের প্রতিটি ইউনিট সাইবার পেট্রোলিং অব্যাহত রেখেছে। এজন্য প্রতিটি ইউনিটের আলাদা সাইবার ইউনিট রয়েছে। এর ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।’
এ সময় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জঙ্গিবাদবিরোধী সরব উপস্থিতি অব্যাহত রাখতে প্রতিটি ইউনিটকে অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।