করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান। আক্রান্ত হওয়ার পর রাজধানীর রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

বুধবার (৭ এপ্রিল) রাতে ডিআইজি হাবিবুর রহমানের করোনামুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের এসপি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) ড. মো. এমদাদুল হক।

তিনি বলেন, ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সর্বশেষ করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। তিনি এখন করোনামুক্ত। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতাল ছেড়ে নিজ বাসায় ফিরেছেন। গত ২৩ মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
এদিকে বাসায় ফিরে ডিআইজি হাবিবুর রহমান নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন


গত ১৫ দিন রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। কিছু সামাজিক যোগাযোগের সুযোগও হয়েছিল। তাদের মধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও ছিলেন। তাদের সবাই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন একটা বিষয় নিয়ে, সরকারি একটি হাসপাতাল কিভাবে এতো পরিচ্ছন্ন, এতো আরামদায়ক হতে পারে। কিভাবে এর সেবা এতোটা আন্তরিকতায় পূর্ণ হতে পারে ইত্যাদি আরও অনেক বিষয় নিয়ে। বিস্মিত হওয়ার পাশাপাশি তারা আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ পুলিশের গর্ব— এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সকলকে। তাদের মতামত আর কৃতজ্ঞতাবোধের সাথে আমারও বুকটা গর্বে ভরে ওঠে।

একটু পেছনে ফিরে দেখি। বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ চাকরিজীবনের শুরু থেকেই একজন ব্যতিক্রমধর্মী কর্মকর্তা, ভিশনারি লিডার। বিচক্ষণতা, দুরদর্শিতা, নেতৃত্ব, পেশাদারিত্ব এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে গুণাবলীর উৎকর্ষে, তিনি অনুসরণীয়।
কালের প্রবাহে, খুব স্বাভাবিক নিয়মে, আজ তিনি বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি। ইতোপূর্বে ডিএমপি কমিশনার, র‌্যাব ডিজির দায়িত্বে থেকে অনেক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন পুলিশ তথা সরকারের ভাবমর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন।

গত বছর মার্চে যখন করোনাভাইরাস এ দেশে তার থাবা বিস্তার করছিল, যখন মৃত্যু প্রতিদিনের সংবাদের প্রধান শিরোনাম, যখন সবাই আতঙ্কে দিশেহারা, যখন মানবতা হারিয়ে গিয়েছিল, সন্তান তার পিতার মৃতদেহ সৎকারে অনিচ্ছা প্রকাশের মতো ঘটনায় সারাদেশ হতবাক; তখন ফিনিক্স রোডের পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে বসে ‘ফিনিক্স পাখির মতো’ এগিয়ে এলেন ড. বেনজীর আহমেদ। নির্দেশনা দিলেন অধীন ইউনিট ও ইউনিট কমান্ডারদের। জেগে উঠলো বাংলাদেশ পুলিশ, নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে এগিয়ে এলো মানবতার সেবক হয়ে এবং নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠলো বাংলাদেশ পুলিশ।
দুরদর্শিতার এক অনন্য নিদর্শন স্থাপন করলেন ড. বেনজীর আহমেদ। নিজ বাহিনীকে সম্মুখসারির যোদ্ধা বানিয়ে তিনি তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়নের ব্যবস্থা করলেন। গত বছরের মার্চের আগে রাজারবাগ হাসপাতাল আর আজকের রাজারবাগ হাসপাতালের পার্থক্য দেখে যে কেউ বুঝতে পারবেন, অল্প সময়ে কতটা আধুনিকায়ন সম্ভব। বলতে দ্বিধা নেই ড. বেনজীর আহমেদের নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের কারণেই আজ সারা দেশের করোনা রোগীদের প্রথম পছন্দ রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল।


পাশাপাশি আইজিপি মহোদয়ের সুযোগ্য সহযোগী হাসপাতাল পরিচালক ড. হাসানুল হায়দার স্যার, তার দূরদর্শী পরিচালনায় ড. এমদাদ, সুপারিনটেনডেন্ট ড. মনোয়ার, অ্যাডিশনাল এসপি শান্তুসহ এক ঝাঁক তরুণ চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপনা, সেবা, নার্সিং, পরিচ্ছন্নতা সবাই মিলে যে টিম ওয়ার্ক তা এক কথায় অভুতপূর্ব। ব্যক্তিগতভাবে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আজ সুস্থ হয়ে আমি হাসপাতাল থেকে ফিরে যাচ্ছি। সাথে নিয়ে যাচ্ছি অসাধারণ কিছু স্মৃতি-সীমাহীন আত্মবিশ্বাস। বিশেষ করে দূরদর্শী পুলিশি নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন