বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. হাবিবুর রহমান।
শনিবার (১ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় হওয়া ৫৫টি মামলার মধ্যে ৯টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এ ছাড় ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে মাদরাসাছাত্রদের চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ৫টি মামলার তদন্তভারও সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে।
সিআইডির ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে এ ধরনের আচরণ করা সম্ভব নয়। এটি সম্পূর্ণ স্বাধীনতাবিরোধী ও ইতিহাস-ঐতিহ্যবিরোধী কাজ। বাংলাদেশকে যেন পিছিয়ে দেওয়া যায়, এটি সে ধরনের স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের কাজ বলে আমি মনে করি। যারা এ ঘটনার পেছনে ইন্ধনদাতা, যারা পরিকল্পনাকারী, তারা ঘটনাস্থলে থাক বা না থাক, অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে। কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তারা আইনের আওতায় আসবে।
তিনি বলেন, জেলা পুলিশ ও সিআইডি এবং পিবিআই সম্মিলিতভাবে মামলাগুলো তদন্ত করছে। আমরা সবাই সমন্বয়ের মাধ্যমে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে মামলাগুলো তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কারা কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল, আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করছি। ভিডিও ফুটেজ থেকে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে অনেককেই শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো মামলাই ঝুলে থাকবে না, যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তির দিকে যাবে।
এর আগে ডিআইজি হাবিবুর রহমান হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও সদর উপজেলা ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন।
এ সময় ডিআইজির সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, সিআইডির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. শাহরিয়ার রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়–য়া, সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা। তারা সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। তিন দিনের তাণ্ডবের ঘটনায় অন্তত ১১ জন নিহত হন। এসব ঘটনায় হওয়া ৫৫টি মামলায় শনিবার (১ মে) সকাল পর্যন্ত ৩৯৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।