নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় শিডিউল অনুযায়ী বিদ্যুতের লোডশেডিং না হওয়ায় সাধারন মানুষ চরম ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারনে ছোট-বড় বানিজ্যিক প্রতিষ্টান, বাসা বাড়ি, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ অফিসের তথ্যমতে, সাতক্ষীরা ওজোপাডিকোর আওতায় প্রায় ৫ হাজার ২০০ বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় মাত্র ৩ থেকে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ কম রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ এর যে সরবরাহ কম পাওয়া যাচ্ছে সে-টি পুরন করতে পৃথক ৭টি ফিডারে কখন এবং কোন সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে তার একটি শিডিউল করা হয়েছে।
তবে সাতক্ষীরায় শিডিউল অনুযায়ী বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় গ্রাহকদের।
সাতক্ষীরা শহরের কাঠিয়া এলাকার মুজিবুর রহমান বলেন , শিডিউল অনুযায়ী দুপুর ১২ টা থেকে ১ টা এবং সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত আমার এলাকায় লোডশেডিং হওয়ার কথা। কিন্তু গত এক সপ্তাহ যাবত রাতে ৭ থেকে ৮ বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। দিনের বেলা একই অবস্থা। আমার বাড়িতে ৪ জন বয়স্ক লোক আছে তারা । প্রচন্ড গরমে পুরো পরিবার কষ্ট পাচ্ছে। জাফর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক জাফর আলী বলেন, দিনে রাতে ২ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার কথ নয়। কিন্তু দিনে ও রাতে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বিধায় ওয়ার্কশপে কোন কাজই করতে পাচ্ছিনে। দূর-দূরাত্ব থেকে মানুষ কাজের জন্য এসে ফিরে যাচ্ছে। ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারনে ব্যবসা বানিজ্য পথে বসার উপক্রম হয়েছে ।
জেলা শহরের সুলতানপুর এলাকার আব্দুর রব জানান, বিদ্যুৎ অফিসের শিডিউল অনুযায়ী আমার এলাকায় দুপুর ২ টা থেকে ৩ টা এবং রাত ৯ টা থেকে ১০ এই ২ ঘন্টা বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং হওয়ার কথা । কিন্তু বিদ্যুৎ অফিস এসব কোন নিয়ম কানুন মানছে না। দিনে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে মানুষ কষ্ট সাঙ্গাতিক ভাবে পাচ্ছে। কোন কাজই সুষ্টু ভাবে করা যাচ্ছে না। শাহাজান আলী জানান, আমার এলাকায় বিকেল ৪ টা থেকে ৫ টা এবং রাত ১১ টা থেকে ১২ টা এই ২ ঘন্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। দিনে যে কত বার যাচ্ছে তার কোন হিসেব নেই। তিনি বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে সাতক্ষীরায় বৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে মেশিনের সাহায্যে সেচ দিয়ে জমি চাষ করতে হচ্ছে। কিন্তু লোডশেডিং এর কারনে চাষ ব্যহত হচ্ছে।
এসব অভিযোগ বিষয়ে সাতক্ষীরা ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ঘোষ বলেন, নির্ধারিত লোডশেডিং এর বাইরেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে। বিধায় অনেক ক্ষেত্র নির্ধারিত লোডশেডিং মানা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আমার এলাকায় মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এর চাহিদা । আমরা বর্তমানে পাচ্ছি ১৫ থেকে ১৬ মেগাওয়াট। ৩ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সল্পতা রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি লোডশেডিং নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী করার জন্য।এদিকে মুনজিতপুর ২ নং ওয়ার্ডের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন ১ ঘন্টার লোড সেডিং ২ ঘন্টা করে দিচ্ছে ভোর ৫ টা থেকে সহাল ৭ টা পর্যন্ত। যার কারনে বসতবাড়ির ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা পর্যন্ত ঘুমাতে পারছেন না তীব্র গরমে।
এবিষয় মুন্সিপাড়া ফিডারের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মেফতা উদ্দিনের সরকারী নাম্বার – 01700-709811 তে ফোন দিলে সে পরপর ২ দিন ফোন রিসিভ করে বিদ্যুৎ চালু করে দেয়। কিন্তু হঠাৎ সে গতকাল থেকে যারা ফোন দিয়ে বিরক্ত করে বিদ্যুৎের জন্যে তাদের নাম্বার গুলো ব্লাক লিষ্ট করে দিয়েছেন উপসহকারী প্রকৌশলী মেফতা।ফলে ভুক্তভোগী রা এখন আর কোথায় অভিযোগ জানাতে পারছেন না।
এ ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে সাতক্ষীরা পৌরবাসী জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।