গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বইছে। এই নিম্নচাপটি ‘সিত্রাং’ নাম নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এরইমধ্যে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত উঠেছে ৪ নম্বরে।
নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি এবং নিম্নাঞ্চলে জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তা উপকূলের ১৯ জেলায় আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্গোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক। রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ নিয়ে জরুরি ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের একথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি লঘুচাপ আকারে ২০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় আন্দামান সাগর এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ধীরে ধীরে ২২ অক্টোবর দুপুর ১২টায় সুস্পস্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। রবিবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি যেহেতু সুপার সাইক্লোন হবে না, সিভিয়ার সাইক্লোন হবে— এটার গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যখন লঘুচাপ সুষ্টি হয়েছে, আমরা তখন থেকেই কাজ শুরু করেছি।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আন্দামান সাগর এবং দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ এবং পরে গভীর নিম্নচাপ আকারে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মনোনয়ার হোসেন জানান, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। অমাবশ্যা তিথির এ সময়ে গভীর নিম্নচাপ ও বায়ুচাপের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের দ্বীপ ও চরাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের পানির চেয়ে ৩-৫ ফুট পর্যন্ত বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।