মেহেদী হাসান বিল্পব: সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায় পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ হয়ে ভ্যানচালক আব্দুল কাদের ও তাঁর স্ত্রী শারমিন খাতুনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার মূল আসামি সবুজ হোসেন অবশেষে আটক হয়েছে। র্যাব-৬, ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি (সিপিসি-১ কোম্পানি) সাতক্ষীরার একটি আভিযানিক দল ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের মাটিলা এলাকা থেকে তাকে আটক করতে সমর্থ হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় র্যাব-৬ (সিপিসি-১ কোম্পানি) সাতক্ষীরার কোম্পানি কমান্ডার প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফত সাংবাদিকদের কাছে এ আটক অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। প্রেস বিজ্ঞতিতে জানানো হয়, গত ২৮ মে ঘটনার পর থেকে মূল অভিযুক্ত সবুজ হোসেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার জেলার বনগ্রাম থানার কমলাপুর গ্রামের শাহাজাহান মন্ডল নামের এক ভারতীয় সহযোগীর আশ্রয়ে ছিলো।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর থেকে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে রোববার বিকেলে সবুজ হোসেনকে (২৫) আটক করে র্যাব-৬ (সিপিসি-১ কোম্পানি) সাতক্ষীরার আভিযানিক দল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সবুজ হোসেন তার অপরাধ স্বীকার করে।
র্যাব আরও জানায়, সবুজ হোসেন এলাকার কুখ্যাত চোরাকারবারি। সে ভারত সীমান্ত থেকে মাদক, গরু এবং অন্যান্য পাচারের সাথে সরাসরি জড়িত। এই পেশায় নিয়োজিত হয়ে সে ইতোপূর্বে ৪টি বিয়ে করে। সে সব ধরনের অপকর্মে জড়িত। তাার বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় হেরোইন পাচারের মামলা চলমান রয়েছে। এ মামলায় সে ১৭ মাস জেল হাজতে থাকার পর মুক্ত হয়ে পরবর্তীতে পলাতক রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে জানা যায়। আটক সবুজ হোসেনকে সোমবার কলারোয়া থানায় হস্তান্তর করা হয় বলে প্রেস বিজ্ঞতিতে উল্লেখ করা হয়। প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে দিবাগত গভীর রাতে কলারোয়ার সীমান্তবর্তী চন্দনপুর গ্রামে ভ্যানচালক আব্দুল কাদেরের ঘরে তালা লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে একই পরিবারের ৩ সদস্যকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা।
ঘরে ছড়িয়ে পড়া আগুনের লেলিহান শিখায় ভয়ানকভাবে দগ্ধ হওয়া আব্দুল কাদের, স্ত্রী শারমিন খাতুন ও একমাত্র সন্তান শিশু ফাতেমা ঢামেক বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ অবস্থায় গত ১ জুন আব্দুল কাদের ও ১৪ জুন শারমিন খাতুন মারা যান। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান দগ্ধ হওয়া শিশু ফাতেমা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসার পর এখন কিছুটা সুস্থ রয়েছে বলে জানা গেছে।