আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভায় এবারও রয়েছে চমক। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এবার স্মার্ট মন্ত্রিসভা গড়েছেন সরকারপ্রধান। আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ঘোষিত অঙ্গীকার বাস্তবায়নের বিষয় মাথায় রেখে নতুন পুরোনোর সমন্বয়ে হয়েছে ৩৬ সদস্যের এবারের মন্ত্রিসভা। এতে পুরোনো ও দক্ষ ১৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বহাল রয়েছেন। একজন উপমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলো মাথায় রেখে নতুন ঠাঁই পেয়েছেন ২০ জন। বুধবার (১০ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভার এই তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নিবেন। তবে তালিকাভুক্ত এই ৩৬ জনের মধ্যে কে কোন মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন পরবর্তী-সময়ে সেই দপ্তর বণ্টন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা যায়, নতুন মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে ডাক পেয়েছেন ২৫ জন। বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যারা ডাক পেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, আ ক ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১), ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫), ডা. দীপু মনি (চাঁদপুর-৩), মো. তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯), আসাদুজ্জামান খান কামাল (ঢাকা-১২), নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (নরসিংদী-৪), আনিসুল হক (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪), ড. হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭), সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১), মহিবুল হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৯), ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১) ও ফরিদুল হক খান (জামালপুর-২)।
এছাড়াও নতুন করে যারা মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে ডাক পেয়েছেন কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১), আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪), র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩), মো. আব্দুর রহমান (ফরিদপুর-১), নারায়ণ চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫), মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম (ময়মনসিংহ-৯), মো. জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩) ও নাজমুল হাসান পাপন (কিশোরগঞ্জ-৬)।
নির্বাচিত এই ২৩ জন সংসদ সদস্য ছাড়াও দুজন টেকনোক্র্যাট (নির্বাচিত সংসদ সদস্য নন) হিসেবে মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার ডাক পেয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এবং বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন।
এছাড়াও মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ১১ জন। তারা হলেন, সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর-৪), নসরুল হামিদ (ঢাকা-৩), জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩), মোহাম্মদ আলী আরাফাত (ঢাকা-১৭, মো. মহিববুর রহমান (পটুয়াখালী-৪), খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (দিনাজপুর-২), জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), রুমানা আলী (গাজীপুর-৩), শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২) ও আহসানুল ইসলাম টিটু (টাঙ্গাইল-৬)।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ থেকে ফোন পেয়েছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) শপথ নিতে যাবো।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বঙ্গভবনে যাবো ইনশাল্লাহ। এই মুহূর্তে আর কিছু বলবো না। বাকি কথা শপথ নেওয়ার পর বলবো।’
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়াবেন। এরপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়া পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে। তবে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের মন্ত্রিসভা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবার এবং সব মিলিয়ে পঞ্চমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।
গত ৭ জানুয়ারি সারাদেশে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। এরমধ্যে ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল স্থগিত রেখে ২৯৮টি আসনের ফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত ফলাফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসন পায়। তবে ভোটের লড়াইয়ে ৬২টি আসনে জয় পায় স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগ নেতা।