সাতক্ষীরায় বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পালিত হয়েছে ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন।
মঙ্গবার(২৬ মার্চ) সকালে ৮টায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজন বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোমুগ্ধকর মার্চপাষ্ট, ডিসপ্লে ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মনোমুগ্ধকর মার্চপাষ্ট, ডিসপ্লে ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এর আগে বেলুন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে ও জাতীয় সংঙ্গীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উড্ডয়নের মাধ্যমে দিনসটির উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী,জেলা ও দায়রা জাজ চাঁদ মো.আব্দুল আলিম আল রাজি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আরিফুর রহমান,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মইনুল ইসলাম মঈন, জেলা সিভিল সার্জন সুফিয়ান রুস্তম, জেলা তথ্য অফিসার জাহারুল ইসলাম, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন মশু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিক, বিএম আব্দুর রাজ্জাক,বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম আব্দুল গফুর,বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম শহিদুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসন,জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্ধ, জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, এনএসআই, ডিজিএফআইয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা ও জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।পরে সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম ভবনের নিচতলায় ৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচি পালিত হয়। রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
এরপর, সাতক্ষীরা শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রাজ্জাকের মাজার জিয়ারত করে । পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান,আলোচনা সভা,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
সেখানে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন,সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. সজীব খান, জেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন মশু, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম আব্দুল গফুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএম আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল করিম, জেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব শরিফুজ্জামান শরিফ সহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গ, জেলা উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের মুক্তিযুদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে জেলার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধাদের পরিবারের সদস্য ও তাদের সন্তানদের ফুল দিয়ে বরন করে নেন জেলা প্রশাসন।
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত লড়াই দিন স্মৃতিময় এই ২৬ মার্চ।আমাদের গৌরবময় মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ডাক, দিয়েছিলেন সর্বশক্তি দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার নির্দেশ। জানিয়েছিলেন চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।এদিন উদযাপন করতে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের বাইরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি উদ্যাপন করছেন।
এর আগে সকাল ৭টায় ৫৪তম মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারা দেশের ন্যায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে খুলনা রোড মোড়স্থ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে জেলা পুলিশ সুপার মো. মতিউর রহমান সিদ্দিকী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।