সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদে এবং দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সেনাসদস্য, সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন।
বেলা ৩টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে গোপীনাথপুর, জালালাবাদ ও নিজাম কান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। রাস্তার দুই পাশে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে উপস্থিত হয়। জড়ো হওয়া নেতা-কর্মীদের সেনাবাহিনী রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা সেনাবাহিনীর ওপর ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করলে স্থানীয় জনতা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালিয়ে সেনাবাহিনীর জিপ গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং কয়েকটি পরিবহন ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় পাঁচজন সেনাসদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত সেনা সদস্যরা ১০ ইস্ট বেঙ্গল ব্যাটালিয়নের সদস্য।
এ সময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় সেনাবাহিনীর একটি স্টেনগান ও গুলিভর্তি একটি ম্যাগাজিন। পরে এক পুলিশ সদস্য সেটি উদ্ধার করে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ আমিনুল হক লাচ্চুর কাছে জমা রাখেন। সেনাবাহিনীকে খবর দিলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর উপজেলার শরিফপাড়া পেট্রলপাম্পের সামনে থেকে কর্নেল সাফায়েতের কাছে অস্ত্রটি হস্তান্তর করা হয়।
সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নিলে সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সেনাবহিনীর গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাএকই দাবিতে একই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয় সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলীয়া ও বিজয়পাশা বাসস্ট্যান্ডে। এ ছাড়া বিক্ষোভ করেছেন কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গোলচত্বর ও মুকসুদপুর উপজেলার পুরোনো মুকসুদপুর এলাকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
গোপালগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর মো. আকিকুর রহমান রুশাদ মোবাইল ফোনে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ আমিনুল হক লাচ্চু বলেন, ‘বিক্ষোভের সময় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর ও সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি অস্ত্র রেখে দেয় তারা। বিষয়টি জানতে পেরে সেখান থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’