সিটিজেন জার্নালিস্ট,সাতক্ষীরাঃ
সাতক্ষীরা: শিক্ষার্থীদের মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে শিক্ষার নিন্মমুখি মান সারাদেশে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে, সেখানে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যাপীঠটি দেখাচ্ছে আশার আলো।
ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষা প্রদানের প্রত্যয়ে শহরের পৌরসভা সড়কে ২০০৬ সালে গড়ে তোলে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭ সালে। দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির ১২০জন শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ১০জন শিক্ষক। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই অভিভাবকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বিদ্যালয়টি।
আধুনিক ও গুণগত শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি সাতক্ষীরা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে রয়েছে নিজস্ব ভবনে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, ডিজিটাল হাজিরা, নিয়মিত ছবি আকা, সংগীত, নৃত্য ও স্পোকেন ইংলিশ চর্চার ব্যবস্থাও। রয়েছে সততা স্টোর।
এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে পারদর্শী হয়ে উঠছে, তেমনি শিশুকাল থেকেই সততাকে ধারণ করতে শিখছে তারা। বিদ্যালয়টির বিশেষ আকর্ষণ হলো প্রতি শনিবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা শিশু শিক্ষার্থীদের উপযোগী বিভিন্ন শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেন। চেষ্টা করেন শিশুদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে। এছাড়া জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন সার্বক্ষণিক তদারকি করেন বিদ্যালয়টি। দরিদ্র শিশুদের পড়াশুনার দায়িত্ব গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সহকারী শিক্ষক রাসেল মাহমুদ বলেন, অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে আমরা প্রতিটি শিশুর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটনোর চেষ্টা করি। শ্রেণিকক্ষে যতজন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকবে, তাদের প্রত্যেককেই সক্রিয়ভাবে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। বর্তমানে শিক্ষার মান নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। তাই প্রকৃত শিক্ষাটাই আমরা শিক্ষার্থীদের দেই। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করে ভাল ফল করুক, বিকশিত হোক। সাজেশন মুখস্ত করে নয়।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক লিপি খাতুন জানান, সব অভিভাবকই চান তার সন্তান যেন প্রথম হয়। তাই অভিভাবকরা বাচ্চাদের উপর অস্বাভাবিক চাপ দেয়। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও সায় দেয়। কিন্তু এতে যে ক্ষতি হয়ে যায় তা কেউ বুঝতে পারে না। এই ক্ষেত্রে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ ব্যতিক্রম। এই স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ না দিতে উৎসাহিত করা হয়। শিক্ষার্থীদের আনন্দের মধ্যদিয়ে শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ ও অভ্যস্ত করা হয়। তাই অভিভাবক হিসেবে নিশ্চিন্ত থাকতে পারি।
সাতক্ষীরা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিসেস সেলিনা আফরোজ জানান, আমরা প্রথম বছরটি অত্যন্ত সফলভাবে অতিবাহিত করে অভিভাবকদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। তাই এ বছর প্রথম শ্রেণি ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি এবং শ্রেণি কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জানান, আধুনিক, মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে সুশৃঙ্খল অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা ও বিদ্যালয়ে উপস্থিতির বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। মূলত ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাববোধ থেকেই বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে। লক্ষ্যে পৌছাতে আমরা বদ্ধ পরিকর।