♠♠♠
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কাঁদো বাংলার মানুষ কাঁদো,
যদি বাঙালি হও নিঃশব্দে কাছে এসো,
আরো কাছে… এখানেই শুয়ে আছেন অনন্ত আলোয় নক্ষত্রলোকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মৌমাছির গুঞ্জনের পাখির কাকলিতে করুণ সুর বাজে,গভীর অরণ্যে পুষ্পের সুগন্ধে….অনেক রক্তের মূল্যে পাওয়া এ স্বাধীনতা।
এখানে ঘুমিয়ে আছে, এইখানে দাঁড়াও শ্রদ্ধায়……!!
কবি রবীন্দ্র গোপ তাঁর ‘কাঁদো বাংলার মানুষ কাঁদো’ কবিতায় এভাবেই শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
বছর ঘুরে আবার এসেছে বাঙালীর কাঁদার মাস। বাঙালীর জীবনে আগস্ট মানেই শোকের মাস, বেদনার মাস। আবার এসেছে বাঙালী জাতির ইতিহাসে রক্তের আখরে লেখা শোকাবহ আগস্ট।
আজ বুধবার ০১/০৮/২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ আগস্টের প্রথম দিন। শোকের মাসে প্রত্যয় ও শপথে শোককে শক্তিতে পরিণত করার অভয়মন্ত্রে আবার উদ্দীপিত হবে বাঙালী জাতি। দেখতে দেখতে জাতির পিতা হত্যার কালো অধ্যায়ের ৪১ বছর পূর্তি হলো। আগস্টের পুরো মাসব্যাপী কৃতজ্ঞ বাঙালী জাঁতি নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বীর বাঙালীর ইতিহাসে কলঙ্কিত এক অধ্যায় সূচিত হয়েছে এ মাসেই। ইতিহাসের দীর্ঘপথ পেরিয়ে বাঙালী জাঁতি পিতৃ হন্তারকদের বিচারের রায় কার্যকরের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হলেও আমাদের প্রতিটি শিরা, উপশিরা ও ধমনিতে তীব্র ঘৃণার উদ্রেক করে এ মাস।
ইতিহাসে হয়ত এ মাসে অনেক বিজয়ের কাহিনি লেখা আছে। কিন্তু বিজয়ের সেসব কাহিনি রক্তের স্রোতের ধারায় মিশেছে আগস্টে এসে।
এ মাস নতুন করে ভাবতে শেখায়। এ মাস প্রতিশোধের চেতনায় শানিত করে সবাইকে। ১৯৭৫ সালের এই মাসেই বাঙালী হারিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
১৫ আগস্ট কালরাতে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি একাত্তরের পরাজিত ঘৃণ্য নরপশুরা।
একে একে হত্যা করেছে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালকে।
জঘন্যতম এই হত্যাকা- থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি, কর্নেল জামিলসহ ১৬ সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। পরাস্ত পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের ষড়যন্ত্রের নৃশংস শিকার হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার তথা মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শ ও চেতনা।
এই শোকের মাসেই বাঙালীর স্বাধীনতার স্থপতির বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল স্বাধীন শ্যামল বাংলার মাটি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, ত্যাগ, দূরদর্শিতা এবং অকুতোভয় আপোসহীন নেতৃত্বে দেশ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল। বাঙালী জাঁতি পেয়েছিল হাজার বছরের আকাক্সিক্ষত প্রিয় স্বাধীনতা, স্বাধীন পতাকা, স্বাধীন মানচিত্র। বজ্রকণ্ঠে তিনি ডাক দিয়েছিলেন স্বাধীনতার। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে রক্তনদী পেরিয়ে অর্জিত হয়েছিল মহার্ঘ স্বাধীনতা। যে বিশাল হৃদয়ের মানুষকে কারাগারে বন্দী রেখেও শারীরিকভাবে কোন ক্ষতি করার সাহস দেখাতে পারেনি পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী, অথচ স্বাধীন বাংলার মাটিতেই তাঁকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সেই ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আজও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। জাতির পিতাকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি ৪৩ টি বছর বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁর সুযোগ্য উত্তরাধিকারী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা।
তাই শোকার্ত বাঙালী জাতি আগস্ট মাসজুড়ে গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবেন বাঙালী জাতির এই মহানায়ককে।
প্রসংঙ্গত, জেলা প্রশাসন খুলনার আয়োজনে গত বৎসর ১৫ ই আগষ্ট খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জনাব আবদুস সামাদের নেতৃত্বে জাতির পিতার ৪২ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি শোক র্্যালি বের করা হয়।উক্ত র্্যালিতে অতিরিক্ত বিভাগীয় বিভাগীয় কমিশনার,কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রাকিবুল ইসলাম,খুলনা জেলা প্রশাসক জনাব আমিন উল আহছান,খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব নইমুল হক,সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খান সহ খুলনা জেলা প্রশাসনের সকল স্থরের কর্মকর্তা,কর্মচারী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।