♦♦♦♦
সারা দেশে রাসায়নিক জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের গোপন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে সারা দেশের বিশেষায়িত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতাল গুলোকে বার্তা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনার ভিত্তিতে হাসপাতালগুলো সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ও লাইন ডিরেক্টর হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির দায়িত্বরত অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন মন্ত্রণালয় থেকে সতর্কতামূলক নির্দেশনা পাওয়ার তথ্য স্বীকার করে এফএনএসকে বলেন, সারা দেশেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল ও বিশেষায়িত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে সতর্কীকরণ পত্র জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে এই চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। জেলা থেকে রাজধানী পর্যায়ে সকল সরকারি হাসপাতালে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই বিষয়ে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অধিদপ্তরকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। হামলার আশংকার বিষয় স্বীকার করে পুলিশের ডিআইজি (মিডিয়া এন্ড প্ল্যানিং) রুহুল আমিন এফএনএসকে বলেন, আমরা আমাদের ইউনিটগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি। যেখানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দরকার তা নেয়া হবে। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত ২৬শে আগস্ট ইস্যু হওয়া এক চিঠিতে দেশে সম্ভাব্য রাসায়নিক জঙ্গি হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, সারা দেশের বিশেষায়িত হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এবং জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক-কাম-সিভিল সার্জনকে পাঁচটি বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। বিষয়গুলো হলো- সম্ভাব্য রাসায়নিক হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে একটি বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা টিম গঠন করা। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-সরঞ্জাম-ওষুধ সীমিত আকারে মজুত রাখা। অ্যাম্বুলেন্স সচল রাখাসহ ওটি কমপ্লেক্সে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা (জেনারেটর) সচল রাখা। বিশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা টিমের সকল সদস্যের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। উল্লিখিত বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে এই বিষয়ে করণীয় পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পক্ষ থেকে গত ০৩/০৫/২০১৮ইং তারিখের ৪৪.০০.০০০০.০৭৫.০৪.০০৯.১৬-৪০৪ স্মারকে এক পত্রের মাধ্যমে সারা দেশে সম্ভাব্য রাসায়নিক জঙ্গি হামলার আশঙ্কার কথাটি জানিয়ে এই বিষয়ে রাসায়নিক হামলার ক্ষেত্রে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জন এবং প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে বলেও প্রতিবেদনে সুপারিশ তুলে ধরে এ ব্যাপারে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। এর আলোকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন স্বাস্থ্য বিভাগ, সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ থেকে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রেহানা ইয়াছমিন স্বাক্ষরিত স্মারক নং-স্বাপকম/বিবিধ-৩৯/২০০৫/৫৭১ এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পত্র দিয়ে এই বিষয়ে সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বলা হয়। আমাদের রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি জানান, ওই পত্র পাওয়ার পর গত ৩০শে আগস্ট স্মারক নং-সি,এস/ রাঙ্গা/ উন্নয়ন/ ২০১৮ইং/ ২১৬৯(১১)-এর মাধ্যমে বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতাল ও জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন কর্তৃক উপরোক্ত স্মারকপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সময়মতো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়। এবিষয়ে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শওকত আকবর খান বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাপ্ত নির্দেশনানুসারে আমরা আমাদের সাধ্যের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরঞ্জামাদির পাশাপাশি একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটিকেও প্রস্তুত রাখা আছে। চলতি সপ্তাহে এই ধরনের পত্র পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন রাঙ্গামাটির ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী। তিনি জানান, আমরা এই ধরনের পত্রটি হাতে পাওয়ার পরপরই সকল স্তরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে আমাদের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে রাখতে বলেছি।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন