মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস খুলনা জেলা পুলিশের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) খুলনা জেলা পুলিশ যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৯ উদযাপন করে।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়।খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ বিপিএম এঁর নেতৃত্বে খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পদন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার (ডিএসপি) মো:আনিচুর রহমান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষীণ) জিএম আবুল কালাম আজাদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল)মোহাম্মদ বদিউজ্জামান,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(বি-সার্কেল)মো:সজিব খান,সি-সার্কেলের এডিশনাল এসপি বদরুদ্দোজা,সহকারী পুলিশ সুপার(সদর) ও সদ্য পদন্নোতি প্রাপ্ত এডিশনাল এসপি জনাব এ.এন.এম ওয়াসিম ফিরোজ গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে সকাল আটটায় খুলনা জিলা স্কুল মাঠে সমগ্র দেশের সাথে একযোগ জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া।

এসময় মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে বিভিন্ন বাহিনী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়। সকাল ১১টা থেকে নগরীর সিনেমা হলসমূহে ও দৌলতপুর শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামান্য চলচ্চিত্র ও দুর্নীতি বিরোধী তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বেলা ১১টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া,খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো:দিদার আহম্মদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান, পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) সরদার রকিবুল ইসলাম বিপিএম এবং পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বিপিএম। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। স্বাগত জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো:জিয়াউর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন মুক্তিযোদ্ধা সরদার মাহবুবার রহমান এবং নূর ইসলাম বন্দ। সভা পরিচালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবীর। এসময় সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশুকেন্দ্র সমূহে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ যোহর কালেক্টর মসজিদ সহ নগরীর মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

বেলা ২টা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত স্থানীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজ খুলনাস্থ বিআইডব্লিউটিএ রকেটঘাটে জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট ভবন সমূহে আলোকসজ্জা করা হয়।

বেলা সাড়ে তিনটায় পাইওনিয়ার স্কুলে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ এবং বিকেল চারটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে কেসিসি একাদশ বনাম জেলা প্রশাসন একাদশ এর মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

সন্ধ্যা ছ’টায় শহীদ হাদিস পার্কে অনুষ্ঠিত হয় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল আটটা হতে বিকেল চারটা পর্যন্ত নগরীর নির্দিষ্ট স্থানসমূহে বাদ্য সংগীত পরিবেশন করা হয়।

সকাল ১০টা হতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শনী এবং কবিতা পাঠের আসর আয়োজন করা হয়। খুলনা বিসিক প্রাঙ্গণে বিকেল তিনটায় তিন দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

দিবসটি উপলক্ষ্যে খুলনা বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে। উপজেলা গুলোতেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে বিভাগীয় কমিশনার অফিস থেকে জানা গেছে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন