পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছে জঙ্গিরা। দেশের ভেতরের জঙ্গিদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের পক্ষ থেকেও হামলার হুমকি এসেছে। সম্ভাব্য এসব হামলা মোকাবিলায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ডিবি, সিআইডি ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান—র্যাবকে সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এই নির্দেশনা সারাদেশের সব পুলিশ সদস্যকেই জানানো হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম ধর্মভিত্তিক জঙ্গিদের হামলার ঝুঁকির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সারাদেশের থানা, ফাঁড়ির পাশাপাশি পুলিশের প্রতিটি ইউনিট এখন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। ঢাকায় বারিধারার কূটনৈতিক পল্লি, পুলিশ সদর দফতর, ডিএমপি সদর দফতর, মন্ত্রিপাড়াসহ সর্বত্র দৃশ্যমান নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি ছায়া নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে। দেশে অবস্থানরত কূটনীতিকদের পাশাপাশি বিদেশি নাগরিকদেরও সতর্ক করা হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানায়।
ঢাকায় কূটনীতিক ও দাতা সংস্থার একাধিক সূত্র জানায়, শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা, রাজধানীর বসিলায় জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযান, গুলিস্তানে পুলিশের ওপর হাতবোমা হামলার পর এমনিতেই চলাফেরায় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এবার পুলিশ ও কূটনৈতিক চ্যানেলেও সতর্ক থাকার নির্দেশনা এসেছে।
সূত্রগুলো জানায়, জঙ্গি হামলার ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা একটি দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের বাংলাদেশে নিয়ে স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় এবং সরকারি পর্যায়ের কয়েকটি বৈঠকও বিদেশি দাতা সংস্থা ও কূটনীতিকরা গুটিয়ে নিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের টার্গেট করে হামলা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন বার বার নির্দেশনা দিচ্ছে। এ কারণে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঝুঁকি বেড়েছে। পুলিশের প্রতিটি সদস্যকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সম্ভাব্য হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে এবং প্রত্যেক সদস্যকে ব্যক্তিগত সতকর্তা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেন, ‘জঙ্গি হামলার ঝুঁকি আছে। আগেও ছিল। এখনও বহাল আছে। আমাদের দেশে জঙ্গি তৈরি হওয়ার রাজনৈতিক প্লাটফরম উগ্রবাদী ধর্মান্ধ রাজনীতি বহাল আছে। তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়নি। দাওয়াতি কর্মকাণ্ড চলছে। অবকাঠামোও বহাল আছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি থাকা স্বাভাবিক।’
তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর ৪০টির বেশি সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে পুলিশ-র্যাব।’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জঙ্গিদের হামলা পরিকল্পনা মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে মনে করেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
সূত্র:বাংলা ট্রিবিউন।