পহেলা রমজান উপলক্ষে জেলা পুলিশ সুপারের আয়োজনে শতাধিক এতিম ছাত্র ও দুস্থ শিশুদের নিয়ে ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার বাঙলোতে পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান কাশেমপুর কওমী মাদ্রাসা ও আলিয়া মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের সাথে ইফতারী করেন।এসময় কয়েকশত এতিম শিক্ষার্থীদের পাসে বসে পুলিশ সুপার ও তার দুই পুত্র প্রথম রমজানের ইফতার করেন।ইফতার করেই শেষ নয়,রাতে এতিম শিক্ষার্থীদের কে পুলিশ সুপার নৈশভোজ করান।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,পুলিশ সুপার জনাব মো: সাজ্জাদুর রহমান বিপিএম শুধু সাতক্ষীরায় বলে কথা নয় তিনি তার নিজ এলাকায় বাবার নামে খুলেছেন ছবেদ আলী ফাউন্ডেশন। উক্ত ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে এলাকার দুঃস্থদের মাঝে প্রতি বছর শীতবস্ত্র বিতারণ, গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি চালু করেছেন। নিজ এলাকায় এসে গরীব অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থী ছাড়াও ছিন্নমুল মানুষদের মাঝে আর্থিক সহযোগিতাও করে থাকেন। এছাড়া এলাকায় ওই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী র্যালী, বাল্য বিবাহ রোধে বিভিন্ন প্রকার কর্মসুচীর মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করার চেষ্টা করে থাকেন ।
জনবান্ধব ও মানবপ্রমী পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানের বর্তমান কর্মস্থল সাতক্ষীরা ডিস্টিক। তাঁর সম্পর্কে সাতক্ষীরা’র জনপ্রিয় অন লাইন পত্রিকা আপডেট সাতক্ষীরা সহ একাধিক গনমাধ্যমকর্মী জানান, চাকুরীর সুবাদে তিনি বেশ কিছুদিন সাতক্ষীরাতে আছেন।এখানকার স্থায়ী বাসিন্দাদের মত তিনি সাতক্ষীরা’র মানুষের সাথে মিশে গেছেন। এখানকার সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে নানা কর্মসূচী পালনসহ বিভিন্ন ধরণের ভালো কাজ করে আসছেন। তার ধারাবাহিকতায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাতক্ষীরা শহর সিসি ক্যামেরার আওতায় এনেছেন।পেশাগত দায়িত্ব পালনে সঠিক জবাবদিহিতার জন্য এবং জনসাধারণের অভিযোগ অনুযায়ী আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলার প্রতিটি গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করেছেন। সম্প্রতি তিনি একশত টাকায় পুলিশে চাকুরী দিয়ে দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। নিজ অর্থায়নে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের দু-পাশে প্রায় ১০(দশ) হাজারসহ সারা জেলায় ৩০ হাজার বৃক্ষরোপন করে নজির স্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এছাড়া পুলিশ কন্ট্রোলরুমে কল করলে মিলবে প্রয়োজন মোতাবেক রক্ত এবং সকল প্রকার সহযোগিতা। এ ব্যবস্থাও তার উদ্যোগে হয়েছে। এছাড়াও বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে খাবার নিয়ে তিনি চলে যান এতিমখানায় অথবা দুঃস্থদের মাঝে। চরম অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেয়া ছাড়াও নিজের পকেটের টাকা খরচ করেন তিনি। সর্বোপরি মানবতার সেবায় তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুরের সিটিজেন জার্নালিস্ট রফিক মন্ডল বলেন মুঠোফোনে সাজ্জাদুর রহমানর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও লেখাপড়ায় মধ্যবিত্ত ছিলাম না। পড়াশুনা শেষ করার পর এদেশ আমাকে সম্মানিত করেছে। আমি ভাবি সমাজের অনেক মানুষের চেয়ে শারিরীক ও মানসিক ভাবে ভালো আছি। কিন্তু সবাই মিলে ভালো থাকতে পারলে সেটাকেই ভালো বলা যাবে। পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে আমি কিছুটা কাজ করি তারপরও সমাজের একজন মানুষ হিসেবে যতটুকু করা প্রয়োজন কর্মব্যাস্ততা থাকায় তার সবটুকু আমি করতে পারি না । বর্তমানে আমার ভাইয়েরাও আমাকে কিছুটা শ্রম ও আর্থিকভাবে সাহায্য করে থাকে। সে কারনেই আমার জন্য এ ধরণের কাজ করা সহজ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সমাজের একজন মানুষ হিসেবে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে অনেক কিছু করতে হয়। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আশানুরুপ সময় হয়ে ওঠে না ফলে ইচ্ছা থাকলেও সবটা করতে না পারলেও অসহায়দের জন্য কিছুটা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি মাত্র।
ইফতার অনুষ্ঠানে ও রাতের নৈশভোজের সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেড কোয়াটার মো: জিয়াউর রহমান, (তালা-পাটকেলঘাটা সার্কেল) হুমায়ন কবির, সহকারী পুলিশ সুপার, জেলা বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ আলী আহমেদ হাশেমী,সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান,ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মোমিন হোসেন সহ ৮ থানার অফিসার ইনচার্জ কে সাথে নিয়ে পুলিশ সুপার এতিম শিক্ষার্থীদের সাথে সন্ধায় ইফতার ও রাতে নৈশভোজ করেন।