আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত ও ঈদ আনন্দ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আইজিপি ২১ মে ২০১৯ খ্রি. মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ নির্দেশ প্রদান করেন।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শপিং মলে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়নের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি। মার্কেটসমূহে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে নিরাপত্তা তল্লাশি এবং বড় বড় শপিং মলে আর্চওয়ে ব্যবহারের পরামর্শদেয়া হয়েছে।

দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাত স্থলে স্যুইপিং এবং আর্চওয়ে স্থাপনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাত স্থলের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।
বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেল স্টেশনে টিকেট কালোবাজারী প্রতিরোধ, অজ্ঞান ও মলম পার্টির অপতৎপরতা বন্ধ করা এবং চুরি ও ছিনতাই রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে মেট্রোপলিটন, জেলা, হাইওয়ে ও নৌ পুলিশ সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সভায় ব্যাংক ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মানি এস্কর্ট প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মহাসড়কে সকল ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা ও হাইওয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি। এ লক্ষ্যে হাইওয়ে ও স্থানীয় পুলিশ, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহ সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা প্রদান করেন। আইজিপি মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া যানবাহন না থামানোর জন্যও সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে বসতবাড়ি, ফ্ল্যাট এবং এপার্টমেন্টে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টহল বাড়াতে হবে। সকল প্রকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং কেপিআইসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

পর্যটন স্পটসমূহ বিশেষ করে বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক, সিনেমা হল ও অন্যান্য জনসমাগমস্থলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরিস্ট স্পটসমূহে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করবে।

আইজিপি জঙ্গি ও উগ্রপন্থিদের তৎপরতা রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি মাদক চোরাচালান ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টাকারীদের উপর গোয়েন্দা নজরদারী বাড়িয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।

আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সবাই প্রিয়জনের সাথে আনন্দ ও নিরাপদে ঈদ উদ্যাপন করতে সক্ষম হবো।

সভায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, রাজশাহীর প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (এএন্ডও) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া, শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি আবদুস সালাম, এন্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ মহসিন হোসেন, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ও হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিবৃন্দ, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জের পুলিশ সুপারগণ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন