সৈয়দ সাদিকুর রহমান:সাতক্ষীরায় সৎ যোগ্য এবং মেধাবিদের মাত্র ১০০ টাকায় পুলিশে চাকরি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার, মোঃ সাজ্জাদুর রহমান (বিপিএম)। সাতক্ষীরা জেলা থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টবল টিআরসি পদে গত ২২ জুন ১৩২০ জন প্রার্থী আবেদন করে, তার মধ্যে প্রাথমিক বাছাই পর্বে, ৫২২ জন প্রার্থী অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়, ২৩ জুন লিখিত পরিক্ষায় অংশ নেয়। ৭৯৮ জন মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৭২ জন চুড়ান্ত ভাবে বিবেচিত হয়, তার মধ্যে পুরুষ ৫৯ জন এবং নারী ১৩ । এ দিকে কোন প্রকার যোগাযোগ এবং অবৈধ্য অর্থ লেনদেন ছাড়াই মাত্র ১০০ টাকায় চাকরি পাওয়ায় প্রার্থী এবং অভিবাবকদের মধ্যে ব্যপক আনান্দ ও উচ্ছাস লক্ষ্য করা গেছে।
্এ বিষয়ে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান (বিপিএম) জানান, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দূর্নীতি মুক্ত দেশ গড়ার যে অঙ্গীকার করেছেন সেই অঙ্গীকারের সারথী বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ পুলিশ প্রধানের নির্দেশে আমরা যে চলমান রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি তা সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে করা হয়েছে। যারা মেধাবী যারা দেশ ও জনগনের প্রান হবে আমরা আমাদের মেধাদিয়ে যতটুকু বুঝেছি মানুষিক ভাবে যারা দেশের সেবায় নিবেদিত হবে তাদেরকে আমরা রিক্রুট করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। পুলিশ প্রধানের নির্দেশে আমরা দূনীতি মূক্ত সততার সাথে এ দায়ীত্ব পালন করেছি, এবং কেউ যাতে প্রতারকের দ্বারা প্রতারিত না না হয় তার জন্য আমরা সর্বচ্য চেষ্টা করেছি, ফলো¯্রুতিতে এক জন পরীক্ষার্থী ও এক দালাল ১১ লক্ষ্য টাকা সহ ধরা পড়েছে। কাজেই সাতক্ষীরা জেলাতে যারা নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে তারা তাদের যোগ্যতায় হয়েছে তাদের শারিরিক এসটাউটনেছের কারনে হয়েছে। যেহেতু ্এই নিয়োগটা সল্প শিখ্যার তাই এখানে শারিরিক ফিটনেস আর মেধার ভিতিত্তে চাকরি হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলাতে পদ খালি ছিল ৩২ জনের কিন্তু বিগত দিনের বিভিন্ন সময়ের মুক্তিযোদ্ধা, পোশ্য, আনসার, এতিম কোটা ৪০ টি পদ খালি থাকায় সব মিলিয়ে আমরা ৭২ জনকে সিলেক্ট করেছি।
এব্যাপারে সরজমিনে যেয়ে আলাপচারিতায় সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত দেবহাটা উপজেলার সখিপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কাশেম গাজীর মেয়ে জান্নাতুল পারভীন জানান, ১২ ভাইবোনের মধ্যে আমি সবার ছোট, বাবা উপার্যন করতে পারে না। অনেক কষ্ট করে লেখা পড়ার খরজ নিজের উপার্যনে করতে হয়েছে, বর্তমানে হাজী কিয়ামুদ্দীন মহিলা কলেজে অধ্যায়নরত। নিজের অনেক ইচ্ছা অর্থ অভাবে মেটাতেও পারিনি, তবে ছোট বেলা থেকে মনের ভেতর পুশে রাখা সপ্ন বাংলাদেশ পুলিশের এক জন গর্বীত সদস্য হওয়ার, আজ আমার সেই সপ্ন পূরোন হয়েছে। আমার বিশ্বাস ছিল আমার সততা এবং মেধা আমাকে কাংক্ষীত লক্ষ্যে পৌছে দেবে। আজ আমার সপ্ন পূরোনের পালা শেষ। সামনে সুধু নিজের দায়ীত্ব ও কর্তব্য পালনের সময়।
পুলিশ সদস্য নিয়োগ বিষয়ে শহরের ঝুটিতলা এলাকার রিয়া খাতুনের বাবা মোঃ আক্তার হোসেন জানান, মাত্র ১০০ টাকার বিনিময়ে আমার বড় মেয়ে রিয়া খাতুন চাকরি পেয়েছে। আমি পেশায় এক জন ট্রাক চালক আমার পক্ষে ঘুষ দিয়ে মেয়ের চাকরি নেওয়ার সামার্থ ছিলনা, মেধা ও যোগ্যতার কারনে আমার মেয়ের চাকরি হয়েছে এতে আমাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরবে।
একই বিষয়ে বিশিষ্ট সমাজ সেবক ডঃ আবুল কালাম বাবলা জানান, বিগত দিনে পুলিশ নিয়োগে নানা অনিয়োম ও দুর্নীতির অভিযোগ লক্ষ্য করা যেতো, তবে এবার নিয়োগে অনিয়োম এবং দুর্নীতি একেবারে জিরো টলারে¯œ, যে কারনে প্রার্থীরা মেধা ও যোগ্যতার বহি-প্রকাশ ঘটাতে পেরেছে। চাকরির শুরুটা যদি সততার সাথে হয় তবে সার্ভিস টাইম সততার মধ্য দিয়ে শেষ হবে। সাতক্ষীরা জেলায় নয় বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় নিয়োগ ব্যবস্থা যদি এমন হয় তাহলে দেশের প্রতিটি প্রান্তে সৎ পুলিশ অফিসার ও পুলিশ সদশ্য তৈরি হবে, তাতে জনগনের প্রত্যাসা অনুযায়ী পুলিশ সেবা দিতে পারবে, সাথে সাথে দেশের মান আরও উন্নত হবে বলে আমি মনে করি।