দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর পুলিশের সকল ইউনিটে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জরুরি স্বাস্থ্য বার্তা পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো বার্তায় করোনাভাইরাস সম্পর্কে আতঙ্কিত না হয়ে এ ভাইরাসের যাতে বিস্তার না ঘটে, সে বিষয়ে সচেতন হতে সকল পুলিশ ইউনিটে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ পুলিশ সজাগ ও সতর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুতি রয়েছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, সম্প্রতি পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া তার নির্দেশে সকল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালকে কোয়ারেন্টাইন সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে।
জরুরি স্বাস্থ্য বার্তায় বলা হয়েছে, কোনো পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি পুলিশের রয়েছে।
কোনো পুলিশ সদস্য জ্বর, কাশিসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে স্থানীয় পুলিশ হাসপাতাল বা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এ ভাইরাসে তিনজন আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ তিনজনের পরিবারের ৪০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৫৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। বিশ্বের ১০৯টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১১৯ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। দেশটিতে একদিনেই ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার।
অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯৪ জন।