সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরাধে ও মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) পুলিশ সদস্যদের করণীয়/বর্জনীয় সম্পর্কিত নিম্নোক্ত নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

১। মাঠ পর্যায়ে যে কোনো দায়িত্ব পালনের সময় এবং মানুষের কাছাকাছি গেলে মাস্ক পরিধান করতে হবে। এছাড়া, মামলা তদন্ত, আসামী গ্রেফতার বা আসামী পরিবহন কালে মাস্ক ও গ্লাভস পরিধানসহ পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

২। কোয়ারেনটাইনে থাকা ব্যক্তির বাড়ি পরিদর্শন বা এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের সময় মাস্ক ও গ্লাভস পরিধান করতে হবে। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী (পিপিই) পরিধান করতে হবে।

৩। নাক ও মুখ ঢেকে যথা নিয়মে মাস্ক পরতে হবে। ব্যবহার শেষে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই যথানিয়মে বিনষ্ট করতে হবে।

৪। অসাবধানতাবশতঃ এবং উপযুক্ত প্রস্তুতি বা অনুমতি ছাড়া কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি, কোয়ারেনটাইনড ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না।

৫। দায়িত্ব পালনকালে যথা সম্ভব লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। পরিচিত বা অপরিচিত কারো সাথেই হাত মেলানো বা কোলাকুলি করা যাবে না।

৬। দায়িত্ব পালনের সময় মানুষ, আসবাবপত্র, দেয়াল, পানিরট্যাপ, দরজার নব ইত্যাদিসহ নিজের শরীরের বাইরে যে কোন বস্তু বা দ্রব্যের অনাবশ্যক স্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।

৭। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু দিয়ে বা কনুই এর ভাজে নাক ও মুখ ঢাকতে হবে। ব্যবহৃত টিস্যুটি তাৎক্ষনিকভাবে ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলে সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে যথানিয়মে হাত ধুতে হবে।

৮। সাবান ও পানি দিয়ে উভয় হাত কজি থেকে নখ পর্যন্ত ন্যূনতম ২০ সেকেন্ড সময় ধরে পরিস্কার করতে হবে। ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। অথবা, নিয়মানুযায়ী হ্যান্ডস্যানিটাইজার দিয়ে ভালো করে হাত পরিস্কার করতে হবে।

৯। ডিউটি শেষে ব্যারাক বা বাড়িতে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সম্ভব হলে, জীবানুনাশক স্প্রে দিয়ে জুতাসহ সারা শরীর জীবানুমুক্ত করতে হবে। ডিউটি শেষে ব্যবহৃত ইউনিফর্ম সাবান দিয়ে ধুতে হবে এবং সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে।

১০। সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে কোনো অবস্থাতেই চোখ, নাক ৰা মুখে হাত দেয়া যাবে না।

১১। বিশেষ প্রয়োজন না হলে ব্যারাক বা বাসার বাইরে যাওয়া যাবে না।

১২। ব্যারাকে বা বাসায় কোনো অতিথি গ্রহণ বা অন্যের বাড়িতে অতিথি হয়ে গমণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

১৩। গণপরিবহণ ও জনসমাগমস্থল যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

১৪। জ্বর ও কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট হলে তাৎক্ষনিকভাবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

১৫। পুলিশের কোনো সদস্য কোয়ারেইনটাইনে থাকলে তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র (গ্লাস, প্লেট, তোয়ালে, বিছানার চাদর ইত্যাদি) অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। তাকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কোয়ারেনটাইনড ব্যক্তির জন্য পৃথক টয়লেট ও বাথরুমের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬। অপরিচিত কেউ বিনা মূল্যে মাস্ক অফার করলে তা নেয়া ঠিক হবে না। অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

১৭। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি বেশি করে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

১৮। বাইরের খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।

১৯। মনে রাখতে হবে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সংক্রান্ত স্বাস্থ্যগত বিষয়াদি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণের। পুলিশ সদস্যগণ শুধুমাত্র নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

২০। আতংকিত না হয়ে সচেতন ও সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে হবে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন