করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে কারবালা স্মরণে রাস্তায় মিছিল করতে দেয়নি প্রশাসন। তবুও পুরান ঢাকার হোসেনি দালানের ভেতরে ‘হায় হোসেন-হায় হোসেন’ মাতমে চলছে শিয়া সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান তাজিয়া (শোক ও সমবেদনা প্রকাশ) মিছিল। হোসেনি দালানের ভেতরে সমবেত হয়ে চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে হায় হোসেন, হায় হোসেন মাতম তুলে মিছিলের মতো ঘুরছেন শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন।

রবিবার সকাল ১০টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের আয়োজন। সকাল সাতটা থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। দিনভর তাজিয়া মিছিলের পাশাপাশি চলবে অন্যান্য আচার অনুষ্ঠান।

পুরান ঢাকার চানখারপুল এলাকার অবস্থিত হোসেনি দালানে সকাল নয়টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, নয়টার পর থেকে সীমিত পরিসরে পবিত্র আশুরা উদযাপনে আয়োজিত অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করে শিয়া সম্প্রদায়ের ইমামভক্তরা। সকাল দশটার আগেই ইমামভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ঐতিহ্যবাহী হোসেনি দালান ইমামবাড়া প্রাঙ্গন। লাল-কালো আর সবুজের সমারোহে নানা অক্ষরখচিক নিশান হাতে ছুটে আসেন তারা। এরপর সকাল দশটা থেকে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান শোক বা তাজিয়া। এতে দশ বিশজন দলবদ্ধ হয়ে চক্রাকারে বুক চাপড়িয়ে চাপড়িয়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে শোকের দিনটিকে স্মরণ করছেন তারা। এসময় তারা ধর্মীয় বিভিন্ন সঙ্গীত গেয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ স্লোগ গাইছেন পবিত্র দিনের স্মৃতিকথা তুলে ধরে। আর কেউ কারবালার যুদ্ধে নিহত হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর সমাধির প্রতিকৃতিতে আগরবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন ফুল দিয়ে। আর কেউ কেউ শিয়া সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠির কবর জিয়ারত করছেন।

তবে অন্যান্য বারের তুলনায় মানুষের পদচারণা ততবেশি না হলেও ইমামবাড়া প্রাঙ্গণ মূলত কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে নারী-পুরুষ, যুবক আর শিশুদের আনাগোনায়। তবে তাদেরকে ভেতরে প্রবেশের আগে দুই স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়েছে।

নিরাপত্তায় নিয়োজিত ডিএমপি ও অন্যান্য সদস্যরা কড়া নজরদারিতে রয়েছেন হোসেনি দালান এলাকায়।

এছাড়া করোনার নিষেধাজ্ঞার কারণে বিহারি ক্যাম্পসহ অন্যান্য শিয়া সম্প্রদায় নিজ নিজ এলাকায় সীমিত পরিসরে তাজিয়া পালন করছেন। তাদের আশা করোনাকাল কেটে গেলে আগামী বছর আগের রুপে ফিরবে তাজিয়া মিছিল।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন