প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন ২৮ সেপ্টেম্বর। একে সামনে রেখে ঢাকায় শুরু হয়েছে ‘জয়তু শেখ হাসিনা’ আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা প্রতিযোগিতা। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর প্রথমবারের মতো অনলাইনে এ দাবা টুর্নামেন্ট হচ্ছে।
সাউথ এশিয়ান দাবা কাউন্সিল আয়োজিত এ টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন ও সাউথ এশিয়ান দাবা ফেডারেশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ডক্টর বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডায় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের কনফারেন্স রুমে টুর্নামেন্টের আনু্ষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনলাইন দাবা টুর্নামেন্টের আর্থিক সহযোগিতা করেছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি আর টুর্নামেন্টের সহযোগী আয়োজক হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ গোল্ডেন স্পোর্টস ক্লাব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও গর্বের বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে টুর্নামেন্টটির উদ্বোধন করতে পেরেছি। এর পুরো কৃতিত্ব দিতে চাই চৌধুরী নাফিজ সরাফাতকে।’
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের আরও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিল ও বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের অধীনে আমরা এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘একটা জায়গা নেওয়ার চেষ্টা চলছে, যেখানে একটা স্পোর্টস হল থাকবে। সেখানে যে কেউ যে কোনো সময় এসে দাবা খেলতে পারবে।’
দাবায় নিয়মিত প্রশিক্ষণের আয়োজন ও সার্বক্ষণিক কোচ নিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে স্কুল দাবার আয়োজন করব, যেখান থেকে আগামী পাঁচ বছরে ৫০০ নতুন খেলোয়াড় পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ও বিশেষ অতিথি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢলের কারণে নিরাপত্তা সংকটের মুখোমুখি হয়েছি। সংকটের সময়ে লাখ লাখ নির্যাতিত রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা দেখিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন। এভাবেই মহান চিন্তাবিদেরা নেতৃত্ব দেন। তাদের নেতৃত্বে থাকে মহানুভবতা, সহমর্মিতা এবং প্রজ্ঞা।’
নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপগুলো আমাদের স্বপ্ন দেখতে, নতুন কিছু শিখতে, নতুন কিছু করতে এবং নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মদিন সামনে রেখে আন্তর্জাতিক দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পেরে আমি নিজেকে অত্যন্ত সম্মানিত ও ভাগ্যবান মনে করছি।’
টুর্নামেন্ট আয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিএমপি কমিশনার সফিকুল ইসলাম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান জনাব ড. চৌধুরী নাফিস শরাফত। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর অতিরিক্ত ডিআইজি ডক্টর শোয়েব রিয়াজ আলম, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাউথ এশিয়ান চেঞ্জ কাউন্সিলের এডভাইজার প্রেসিডেন্ট সৈয়দ শিহাব উদ্দীন শামীম, গোল্ডেন স্পোর্টস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আমির আলী রানাসহ অন্যান্যরা।
দাবা ফেডারশেন সূত্রে জানা গেছে, এই অনলাইন দাবা টুর্নামেন্টে গ্র্যান্ডমাস্টার হিসাবে বিভিন্ন দেশের ৯ জন, আন্তর্জাতিক মাস্টার গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে ১১ দেশের ১৮ জন এবং বাংলাদেশ থেকে গোল্ডেন স্পোর্টিং ক্লাব থেকে নির্বাচিত ৪৯ জন বাংলাদেশি খেলোয়াড় অংশ নিয়েছেন।
বিভিন্ন দেশ থেকে প্রথমবার অনলাইনে অংশ নিয়ে দাবা টুর্নামেন্টের খেলোয়াড়দের কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ১৬ জনকে পুরুস্কৃত করা হবে। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ১২০০ ডলার, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮০০ ডলার ও তৃত্বীয় পুরস্কার হিসেবে ৫০০ ডলার এবং চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ৩০০ ডলার দেয়া হবে। এছাড়া পঞ্চম থেকে নবম পর্যন্ত পত্যেককে ২০০ ডলার দেয়া হবে। পাশাপাশি দশম হতে ১৬তম স্থান অর্জনকারীদের ১০০ ডলার প্রাইজমানি দেওয়া হবে। টুর্নামেন্ট শেষে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।