জলদস্যুদের যারা গডফাদার তাদের তালিকা হাতে রয়েছে জানিয়ে হুঁশিয়ার করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, এসব গডফাদারদের নামের তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তাদের কোনো রেহাই হবে না।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে র্যাবের তত্ত্বাবধানে ৩৪ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই হুঁশিয়ারি দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আজ যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়াও অন্যান্য মামলা থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আর যারা আত্মসমর্পণ করেননি তাদের কঠিন অবস্থার মোকাবেলা করতে হবে।
আত্মসমর্পণ করায় জলদস্যুদের ধন্যবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এখনো আত্মসমর্পণ করেননি তাদের জন্য স্পষ্ট বার্তা হলো-আপনারা পালিয়ে বেড়াতে পারবেন হয়তো। কিন্তু আস্তানা গড়তে পারবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ের ন্যায় আজ যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকার সহযোগিতা করবে। পুনর্বাসন করা হবে সবাইকে। তাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। আর যারা এখনো নদী, সাগর বা পাহাড়ে থাকতে চান তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। তাদের যারা মদদ দিচ্ছেন তাদের পরিণতি হবে আরও ভয়াবহ।’
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দস্যুতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো অপরাধী অপরাধ করে পার পাবে না। র্যাব, পুলিশসহ সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আধুনিকায়নে বিশেষ করে র্যাব ও পুলিশের জন্য সরকার প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, গাড়িসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। মাদকের অবাধ প্রবাহ রোধকল্পে র্যাবের অনেক ভূমিকা রয়েছে। করোনার মধ্যেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে অনেক মানবিক অবদান রেখেছে। করোনাকালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত পুলিশের ৭৫ জন এবং র্যাবের ৫ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, আমরা অতি শিগগিরই বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলকে জলদস্যু ও ডাকাত মুক্ত ঘোষণা করবো। আমরা সেই সুন্দর দিনের অপেক্ষায় আছি।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু,সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক,সংসদ সদস্য জাফর আলম, স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পুলিশের কিংবদন্তী ইন্সপেক্টর জেনারেল ড.বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার , চট্রগ্রাম রেজ্ঞের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল আনোয়ার হোসেন, চট্রগ্রামের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব-৭ এর অধিনায়ক, সহ বিভিন্ন সংস্থার উদ্ধর্ত্তন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।