ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিবিরোধী আন্দোলনে দলের কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ডাকা হরতালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন করা হেফাজতে ইসলামকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

রবিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এসব পথ থেকে সরে আসতে সরকার তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় মানুষের জানমাল রক্ষা ও দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সরকার কঠোর হবে।

মোদির ভারত সফরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করার সময় গত শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে হেফাজত। এর প্রতিবাদে শনিবার বিক্ষোভ ও রবিবার হরতাল ডাকে ধর্মভিত্তিক সংগঠনটি।

দুই দিনের কর্মসূচির প্রথমদিন শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংগঠনটির আরও পাঁচজন মারা যান। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন রবিবার সারাদেশে হরতাল পালনকালে নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।

হেফাজতের এসব সহিংসতায় জঙ্গি সংগঠন, জামায়াত এবং বিএনপির মদদ থাকতে পারে বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সবসময় দুই দল বা দুই গ্রাম মারামারি করে। তবে কোনো যে মানুষের ঘর বাড়ি, গ্রাম এরা (হেফাজত) পুড়িয়ে দিচ্ছে। এটা জঙ্গি সংগঠনগুলোর কাজ হতে পারে, জামায়াতের কাজ হতে পারে এমনকি বিএনপিও মদদ দিতে পারে। এর সবগুলোই আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তারা (হেফাজত) উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আমরা মনে করি এগুলো নাশকতা। এগুলো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। আমরা আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে জানাচ্ছি এগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য। না হলে আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি বা নেব। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা যেনো আরও ক্ষতির সম্মুখীন না হন সেজন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
‘আমরা মনে করি অহেতুক এই অবস্থানে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা জানমালের ক্ষতি করা এটা আমাদের কাছে কাম্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা আপনাদের মাধ্যমে এই সকল কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।–যোগ করেন মন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেখেছেন। প্রেসক্লাবে পর্যন্ত আগুন লাগানো হয়েছে। একজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এবং আমাদের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী চরম ধৈর্যের সঙ্গে এগুলো পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা মনে করি এই কাজ যদি বন্ধ না করে তাহলে আমাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সহিংসতা করা হচ্ছে এমন মন্তব্য করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, হরতাল দিয়ে ভাঙচুর করার অধিকার তাদের নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়া, পুলিশের ফাঁড়ি আক্রান্ত করা হয়েছে। শিশুদের রাস্তার মধ্যে বসিয়ে দিয়েছে। এগুলো সবগুলি একটি উদ্দেশ্যকে মাথায় নিয়ে। একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। সুন্দরভাবে দেশ চলছে সেজন্য তাদের এই প্রচেষ্টা।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মন্ত্রী বলেন, তাদের রণকৌশলগুলো বাঁশের কেল্লার মতো। স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে আগে যারা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য চালানোর মতো প্রয়াস পেয়েছিল, তারাই আবার সম্পৃক্ত হয়েছে। সবগুলোই আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সুতা ধরে যখনই টান দেই তখনই আমরা দেখতো পাই এই ধরনের সংগঠনের মূল নেতারা বিগত সময়ের জামায়াতের নেতাদের নাম চলে আসে। সবগুলোর মূল নেতৃত্ব আসছে এই জামায়াত-শিবির থেকে।

ফেসবুকের গতির বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফেসবুক অ্যাপসের গতি কমিয়েছে কি না আমি সঠিক জানি না। এটা কোনো যান্ত্রিক সমস্যা হতে পারে এটা বিটিআরসি ভালো বলতে পারবে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন