বিমানে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযেগে এক ‘প্রতারক চক্রের’ চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।

বুধবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান সিআইডির ডিআইজি মো:হাবিবুর রহমান বিপিএম।

গ্রেপ্তাররা হলেন, শামীম আহমেদ ওরফে মোস্তফা মনির (৪৫), তানজিলা সুলতানা সমাপ্তি (২৫), মো. শরিফুল ইসলাম (৩৭) ও সাবেক সেনা সদস্য বজলুর রশিদ (৪৮)।

সিআইডির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার শামীম নিজেকে কখনও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, কখনো এমডি বলে পরিচয় দিতেন। তানজিলা নিজেকে বিমান বালা ও টিকেটিং অফিসার হিসেবে দাবি করতেন। আর বজলুর রশিদ নিজেকে শামীমের বডিগার্ড বলতেন।

ডিআইজি হাবিবুর বলেন, “এ চক্রের সদস্যরা বিমানে নিয়োগের সার্কুলার হলে লোকজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। অনেকের কাছ থেকে ১৩ থেকে ১৭ লাখ টাকা করে আত্মসাৎ করে প্রতারণা করে আসছিল তারা।”

চাকরিপ্রত্যাশীদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য তারা ভুয়া পরীক্ষার আয়োজন করত এবং সবাইকে ফেল করিয়ে দিত। পরে সেই ‘ফেল’ করা চাকরিপ্রত্যাশীদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা টাকা হাতিয়ে নিত বলে সিআইডির অভিযোগ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানের একটি বিভাগে সহকারী পরিচালক পদে চাকরির জন্য এক ব্যক্তি শামীমকে ২০১৯ সালে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তার করা প্রতারণার মামলায় ওই চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ডিআইজি বলেন, শামীম দীর্ঘদিন আগে একটি সিঅ্যান্ডএফ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেই সূত্রে বিমানবন্দরে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে একসময় তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।

গ্রেপ্তারের সময় শামীমের কাছ থেকে ফরমাল শার্ট, প্যান্ট, স্যুটসহ মোবাইল ফোন এবং ভুয়া নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, “বিমানে নানা জনকে চাকরি দেওয়ার নামে সে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শামীমের সঙ্গে যোগসাজশ করে এলাকার লোকজনকে চাকরি দেওয়ার নামে ‘টাকা হাতিয়ে নিতেন’ তানজীলা। তাদের দুজনকে ঢাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিজের ফেইসবুক পেইজে তানজিলা কেবিন ক্রুর পোশাকে ছবি দিতেন এবং নিয়োগ প্রত্যাশীদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য একবার তিনি বিমানে করে সৈয়দপুরেও যান বলে সিআইডির ভাষ্য।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শামীমের বডিগার্ড হিসেবে পরিচয়দাতা বজলুর রশিদ সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসেবে এক সময় র‍্যাবের সদস্য ছিলেন। ২০০৭ সালে একটি ডাকাতির মামলায় চাকরিচ্যুত হয়ে তিনি আট বছর জেলেও ছিলেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শামীম দাবি করেছেন, বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। এর আগে বেশ কয়েকজনকে কেবিন ক্রু, এক্সিকিউটিভ অফিসার, সিগন্যাল ম্যান, চেকিং অফিসার, এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার পদে তিনি নাকি ‘চাকরিও দিয়েছেন’।

সিআইডি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, “আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের যোগসাজশের আভাস পাওয়া গেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন