র্যাব-৬ এর অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির সময় গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামীকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার ও ডাকাতির মালামাল উদ্ধার করেছে। র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে.কর্ণেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমেদ শুক্রবার সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান,
গত ২ মার্চ ২০২২ তারিখ বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ থানাধীন উত্তর জিলবুনিয়া এলাকার এক বাসিন্দা তার স্ত্রী ও ছেলে সহ খাওয়া দাওয়া শেষে তার নিজ বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। দিবাগত রাত ০১.৩০ ঘটিকার সময় স্থানীয় ১০/১২ জন দুস্কৃতকারী পরিচয় গোপন করা লক্ষ্যে মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে সংঘবদ্ধ হয়ে ঐ ব্যক্তির বসত ঘরে সিদ কেটে ঘরে প্রবেশ করে তার ছেলে ও তাকে ধাঁরালো রাম দা এর মুখে হাত পা বেঁধে লেপ দিয়ে ঢেকে রেখে তার স্ত্রী কে অন্য ঘরে নিয়ে যায় এবং নগদ টাকা, স্বর্নালংকার, মোবাইল ফোন, শাড়ী ও শুকনা সুপারিসহ মোট ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫ শত টাকার মালামাল ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষে ঐ ব্যক্তির স্ত্রীকে পালাক্রমে নৃশংসভাবে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণকালে ০১ জন ডাকাতের মুখের কাপড় সরে গেলে ধর্ষিতা ভিকটিম ঐ ধর্ষণকারী ডাকাতকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরপর দুস্কৃতকারীরা রাত আনুমানিক ০৩.৩০ ঘটিকায় ডাকাতির মালামাল নিয়ে সরে পড়ে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম স্বামী বাদী হয়ে বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ থানায় ধর্ষণকারী ডাকাতদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ বিষয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
লে.কর্ণেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমেদ প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, উক্ত ঘটনার পর থেকে আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) এর একটি আভিযানিক দলটি ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যহত রাখে।এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ ও ডাকাতি মামলার অন্যতম পলাতক আসামী বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন টেংরাখালী গ্রামস্থ বাঘমারা খেয়াঘাট এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ০৩ মার্চ ২০২২ তারিখ ১৭.৫৫ ঘটিকার সময় সদর কোম্পানি, র্যাব-৬, খুলনার একটি চৌকস আভিযানিক দলটি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানাধীন টেংরাখালী গ্রামস্থ বাঘমারা খেয়াঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পলাতক আসামী ১। রিয়াজ শিকদার(৩৮), পিতাঃ মৃত আঃ মজিদ শিকদার, মাতা-আম্বিয়া বেগম, সাং-বর্শিবাওয়া, থানা-মোড়েলগঞ্জ, জেলা-বাগেরহাটকে গ্রেফতার করে। আসামীকে গ্রেফতারের পর আসামীকে অদিকতর জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা স্বিকার করে। আসামীর স্বিকারোক্তি মতে আসামীর বসত বাড়ি হতে ডাকাতির মাধ্যমে লুন্ঠিত মালামাল ১। ভিকটিমের মোবাইল ফোন-০১ টি, ২। নগদ-৫৫০০ টাকা, ৩। শুকনা সুপারী-০২ বস্তা, এবং আসামীর ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১। ০১ টি মোটর সাইকেল, ২। মোবাইল ফোন-০৪ টি, ৩। ০৪ টি সীম কার্ড, ৫। ০২ টি মেমোরি কার্ড উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামী তার সাথে আরো কয়েকজন দুস্কৃতকারী ছিল বলে জানায়। তাদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৬ এর অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের আরো ০৯টি মামলা রয়েছে।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমেদ আরো জানান,গ্রেফতারকৃত আসামীকে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানায় হস্তান্তর এর কাজ প্রক্রিয়াধীন।