আসাদুজ্জামান সরদার: অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয় নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তনয়া শেখ হাসিনাকে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আনার দৃঢ় প্রত্যয়ে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার উদাত্ত আহ্বানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বর্ধিত সভা। সভার আগে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে মিছিল নিয়ে অংশ গ্রহণ করেন। এ সময় সৃষ্টি হয় এক নতুন উদ্দীপনা। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পেয়ে জেগে ওঠে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো। দিকে দিকে শোনা যায় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা’ স্লোগান। সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন সবুজ চত্ত্বরে নামে জনতার ঢল। তৃণমূল আওয়ামী লীগে বয়ে যায় উল্লাসের শিহরণ।

হাজারো মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ শোনালেন জাগরণের সেই অভয় বাণী। ফুলেল শুভেচ্ছায় মোড়ানো মঞ্চে দাঁড়িয়ে সরকারের সাফল্য ও লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি বললেন, সাতক্ষীরার দলীয় তিনজন এমপির বক্তব্য শুনে আমি সন্তুষ্ট। সারাদিন নেতাদের বিরুদ্ধে কাদা ছুড়াছুড়ি হয়েছে। এটা শুনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তারা সেদিকে না যেয়ে, তারা স্বীকার করেছেন ভুলভ্রান্তি হয়েছে। উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই যত শিঘ্রই সম্ভব আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ যারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন তাদের সাবাইকে নিয়ে প্রচেষ্টা চালাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেলার প্রতিটি আসন যাতে শেখ হাসিনাকে তারা উপহার দিতে পারেন। এব্যাপারে সবাইকে একমত হতে হবে। প্রতিটি জায়গায় প্রতিযোগিতায় থাকে। পরিবারের মধ্যেও প্রতিযোগিতা থাকে। আপনারা বর্ধিত সভায় যে বক্তব্য দিয়েছেন এই বক্তব্য জনসম্মুখে দিবেন না। এতে আমাদের দলের মারত্মক ক্ষতি হতে পারে।


তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দিন-রাত চেষ্টা করে যাচ্ছেন এ দেশের গরীব দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য। মানুষ যাতে তিনবেলা খেতে পারে সেটাই নেত্রীর চাওয়া। তিনি আর কিছু চাননা। আমাদের অনেকের রাজনীতি বিভিন্ন কারণে হতে পারে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। এখান থেকে আমাদের শপথ নিতে হতে আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে পারি জনগণের ভোটের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার আহ্বানে বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শুক্রবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় থেকে শুরু হওয়া দিনব্যাপী সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সাংসদ একে ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক-এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এড. মো. আমিরুল আলম মিলন-এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এড. গ্লোরিয়া সরকার ঝর্না, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রবি ও সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার প্রমুখ।


কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আহবানে তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান অসলে, শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শওকাত আলী, আলিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান (ময়ুর ডাক্তার), বাঁশদহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো. মফিজুর রহমান, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমার, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শম্ভুজিত মন্ডল, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন প্রমুখ।
এসময় তৃণমূল নেতৃবৃন্দ জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগে জামাত-বিএনপি থেকে জেলার নেতাদের হাত ধরে দলে আসা হাইব্রিডদের দ্বারা ইউপি নির্বাচনে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর দ্বারা অত্যাচার এবং তাদের কারণে ইউপি নির্বাচনে নৌকার পরাজয়কে দায়ী করেন এবং সেই সাথে হাইব্রিডদের দল থেকে বহিস্কার দাবী করেন। দলের ভিতরে কোন্দল বন্ধ করে দলকে সুসংগঠিত করার আহবান জানান নেতারা।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রেীয় আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি বলেন, দলকে আরও গতিশীল করতে আমার নির্বাচনী এলাকার কালিগঞ্জের চারটি, দেবহাটার ৫টি এবং আশাশুনির ১১টি ইউনিয়নে বর্ধিত সভা করেছি। যে সকল ঝামেলা ছিলো সেগুলো আলাপ আলোচনা করে মিল মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। তৃণমূলে যারা যার প্রতিনিধিত্ব করে তাদের সুসংগঠিত করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডকে সুসংগঠিত করতে হবে। এটি করলে দল আরও শক্তিশালী হবে। বিরোধীদলগুলো আবারও শক্তি সঞ্চয় করে দেশকে বিপদে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা সবাই সুসংগঠিত হলে তারা আমাদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। জেলার প্রতিটি যুব সংগঠনগুলো একেবারেই দুর্বল। এগুলো চাঙা করতে হবে। তাহলে সাম্প্রতিক শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারবে না। আমাদের দলের নারীদের আরও শক্তিশালীর করতে হবে। তাহলে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর হাত আরও শক্তিশালী হবে এবং নৌকা বিজয়ী হয়ে দল ক্ষমতায় আসবে।


আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, আমাদের এক সময় বলো হতো তলাবিহীন ঝুড়ি। সেই বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের রোল মডেল। যারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী হয়েছেন এবং নৌকার বিরোধিতা করেছেন দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে তাদের দল থেকে বহিস্কার করা হবে। তাদের পুনরায় আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে যোগ দিয়ে বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে তারা আবারও পদ পদবী পাবেন। এরপরে আর কেউ নৌকার বিদ্রোহী হলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুব দ্রুত সকল কমিটি অনুমোদন দেওয়া হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক সাংসদ ডা. মোখলেছুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী এরতেজা হাসান, মো. শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক আবু আহমেদ, শেখ শাফী আহমেদ, মাস্টার নীলকণ্ঠ সোম, শেখ সাহিদ উদ্দিন, মিসেস সাহানা মহিদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, মো. আসাদুজ্জামান বাবু, আ. হ. ম তারেক উদ্দীন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড: ওসমান গনি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ডা. মুনছুর আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফসার আহমেদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন-উর-রশিদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আরাফাত হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট অনিত কুমার মুখার্জী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক গাজী আনিসুজ্জামান আনিচ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জিএম ফাত্তাহ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিমুন শামস্, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সন্তোষ কুমার সরকার, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক শেখ আব্দুল কাদের, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সরদার মুজিব, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শামীমা পারভীন রতœা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সুব্রত কুমার ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম শফিউল আযম লেনিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতাউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আখতার হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক শেখ আসাদুজ্জামান লিটু, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু, কোষাধ্যক্ষ বাবু রাজ্যেশ্বর দাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফিরোজ আহমেদ, এসএম শওকত হোসেন, এবিএম মোস্তাকিম, এড: মোজহার হোসেন কান্টু, শেখ নুরুল ইসলাম, নরীম আলী মাস্টার, মো. মুজিবুর রহমান, ফিরোজ আহমেদ স্বপন, শেখ নাসেরুল হক, শেখ আব্দুর রশিদ, মো. শাহ্জাহান আলী, মো. সাহাদাত হোসেন, ঘোষ সনৎ কুমার, এসএম আতাউল হক দোলন, মো. মনিরুজ্জামান মনি, আমিনুল ইসলাম লাল্টু, সাঈদ মেহেদী, মো. আব্দুল কাদের, সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনু, অধ্যক্ষ জাফরুল আলম বাবু, মীর মোশারফ হোসেন মন্টু, মো. আসাদুজ্জামান অসলে, এড: সৈয়দ জিয়াউর রহমান বাচ্চু, এনামুল হক ছোট, ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান সুমন, মিসেস কহিনুর ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম, শেখ মনিরুল হোসেন মাসুম, নাজমুন নাহার মুন্নি, মো. সামছুর রহমান, মীর জাকির হোসেন, মিসেস মাহফুজা রুবি ও ইসমত আরা বেগম প্রমুখ।

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন