সাতক্ষীরায় ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মাস ব্যাপি সাঁতার প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা জেলা স্টেডিয়ামের হলরুমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচি-২০২৩-২৪ এর আওতায় জেলা ক্রীড়া অফিস সাতক্ষীরার আয়োজনে জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে মাস ব্যাপি সাঁতার প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে সনদ বিতরণ করেন পরিচালক (যুগ্ন সচিব) ক্রীড়া পরিদপ্তর, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আ, ন, ম তরিকুল ইসলাম।
গত ১৪/৫/ ২০২৪ তারিখ হতে ১৩/৬ /২০২৪ তারিখ পর্যন্ত মাসব্যাপী এ সাঁতার প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। সাঁতার প্রশিক্ষণে ৪০ জন প্রশিক্ষনার্থী অংশ নেয়। উক্ত অনুষ্ঠানে জেলা ক্রীড়া অফিসের কর্মকর্তা, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা, বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধি ও ক্ষুদে সাঁতারুরা উপস্থিত ছিলেন। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স।
এ সময় প্রধান অতিথি তরিকুল ইসলাম, পরিচালক, ক্রীড়া পরিদপ্তর তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার ক্রীড়াবান্ধব সরকার। আর আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মতো ক্রীড়াপ্রেমী বিশ্বে খুঁজে পাওয়া বিরল। সরকার ক্রীড়ার মানোন্নয়নের জন্য আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। সরকারের নানাবিধ পরিকল্পনা ক্রীড়া পরিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে, ক্রীড়া পরিদপ্তর কর্তৃক দেশব্যাপী বয়স ভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হচ্ছে , দেশব্যাপী বিনা মূল্যে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাঁতার প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা আয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিকতার সাথে, নিষ্ঠার সাথে কঠোর পরিশ্রম করছি, আজকের এই সাঁতার প্রশিক্ষণ তারই অংশ। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়নের জন্য ক্রীড়া পরিদপ্তর কর্তৃক এবছর প্রথম সাঁতার শিখানোর কিডস ক্রয় করা হয়েছে।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, তাই সাঁতার শেখা খুবই জরুরি।ক্রীড়া পরিদপ্তরের আওতাধীন জেলা ক্রীড়া অফিসের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে শিশুদের সাঁতার শেখানো, সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এই সাঁতার প্রতিযোগিতা থেকে প্রাপ্ত প্রতিভাবান সাঁতারুদেরকে আবাসিক উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ সাঁতারু হিসেবে গড়ে তোলাই ক্রীড়া পরিদপ্তরের মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন,সাঁতার শিখি, জীবন বাঁচাই।প্রধান অতিথি তরিকুল ইসলাম সাঁতার প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,সাঁতার একধরনের শারীরিক ব্যায়াম। নিয়মিত সাঁতার কাটলে একজন ব্যক্তির ফুসফুস ও হ্রদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা অনেক বেড়ে যায় এবং গবেষণায় দেখা গেছে যে, একজন সাঁতারুর মৃত্যুর আশঙ্কা কর্মহীন ব্যক্তির অর্ধেক। সপ্তাহে কেউ যদি আড়াই ঘণ্টা করেও নিয়মিত সাঁতার কাটে, তাহলে তার ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হ্রদরোগ এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাধির ঝুঁকি কম থাকে। জীবন বাঁচাতেও সাঁতারের বিশেষ অবদান রয়েছে। তিনি বলেন,সাঁতারকে বলা হয় পুরো শরীরের ব্যায়াম অর্থাৎ Full Body Exercise। সাঁতার কাটলে আপনাকে সুস্থ থাকা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের মত। দিনে ১ ঘণ্টা সাঁতার কাটলেই কাছে ঘেঁষবে না কোনও রোগ মর্মে তিনি জানান। তাছাড়া সাঁতার হার্ট সুস্থ রাখে, ওজন কমায়,হাড় মজবুত করে, ঘুম ভালো হয়, মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে, পেশির পাশাপাশি ফুসফুস এবং হৃদযন্ত্রেরও উপকার করে সাঁতার
শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করে, শরীরের বিভিন্ন অঞ্চলে রক্ত চলাচল বাড়ায়। এর ফলে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে কর্মক্ষমতা
সবশেষে তিনি বলেন,
Swimming is not a sports, it is a way of life. Swimming is not just a sports, it is a way to escape, to breathe, to find peace in the chaos of life.
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান শাহীন, মীর তাজুল ইসলাম রিপন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মো. আব্দুল মান্নান, মির্জা মনিরুজ্জামান কাকন, শেখ হেদায়েতুল ইসলাম, সাঁতার প্রশিক্ষক জাতীয় সাঁতারু শেখ শফিউল বারী, সহযোগি প্রশিক্ষক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য, প্রিন্স ফুটবল কোচের পরিচালক খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স ও ক্রীড়াবিদ খাদিজা আক্তার চায়না প্রমুখ।
উল্লেখ্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর সমুহের মধ্যে এ বছর দূর্নীতি ও অনিয়মের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত ক্রীড়া পরিদপ্তর সৃষ্টির পর থেকে এই প্রথম ক্রীড়া পরিদপ্তর এর পরিচালক (যুগ্ম সচিব) আ, ন,ম তরিকুল ইসলাম শুদ্ধাচার পুরষ্কার পাওয়ায় অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়।