চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে গণপরিবহন বন্ধের যে সময়সীমা ঘোষণা করা হয়েছিল সেই সময় বাড়ানো হয়েছে।
আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের অংশ হিসেবে দেশের সব ধরনের যানবাহন বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
শনিবার সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে ভিডিও বার্তায় একথা জানান ওবায়দুল কাদের।
গত বছরের শেষ দিন চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর সেটি চীনের ভূখণ্ড পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের ২০০টির মতো দেশে শনাক্ত হওয়া করোনার উপস্থিতি বাংলাদেশে দেখা দেয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হলেও এখন সেই সংখ্যাটা ৭০। তাদের মধ্যে আটজন মারাও যান।
করোনাভাইরাস বাংলাদেশে যেন ব্যাপক আকারে ছড়াতে না পারে সেজন্য সরকার নৌপথে লঞ্চ, রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এছাড়া ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহনও বন্ধ করা হয়। আজ শেষ দিন ছিল।
কিন্তু বাংলাদেশে এখনো করোনার সংক্রমণ দেয়া দেয়ায় ঝুঁকি এড়াতে গণপরিবহন বন্ধের সময় আরও বাড়ানো হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের জনগণ, যাত্রী সাধারণ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সকল স্টেক হোল্ডারদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, ইতোপূর্বে ২৬ মার্চ হতে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার সব ধরনের যানবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। আপনারা জানেন সরকার আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি বর্ধিত করেছে। এই অবস্থায় জনস্বার্থ বিবেচনায় ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ রাখার অনুরোধ করছি। তবে জরুরি সার্ভিস বিশেষ করে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ওষুধ, জ্বালানি, পচনশীল পণ্য, ত্রাণবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। তবে পণ্যবাহী যানে কোনোভাবেই যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।’
দেশের সংকটকালে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অবদান স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই সংকটে আমাদের দেশের পরিবহন অনেক গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অতীতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে মালিক-শ্রমিকরা। আজকে এই সংকট আমাদের সকলের। এই সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে নির্দেশনামা সেটি মেনে চলে আপনারা ১১ তারিখ পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখবেন। পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে জানা যাবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘সাধারণ ছুটির মধ্যে যানবাহনের ফিটনেস বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ন হলে জরিমানা ছাড়া নির্ধারিত ফি ও কর দিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত ফিটনেস নবায়ন ও লাইসেন্স আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে।’