এবারের ঈদটা তোলা থাক, জনগনের প্রতি আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এঁর আহবান!!
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে জনগনকে আসন্ন ঈদে ঘরে থাকার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এবারের ঈদটা তোলা থাক। সামনের ঈদুল আজহা বা তার পরের ঈদে উৎসব করা যাবে। ঈদের সময়ে শহরে ও গ্রামে যে যেখানে আছেন, তারা যেন ফুর্তি করতে বের না হন। এতে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরী হবে।
নিজ বাসস্থানে থাকার আহবান জানিয়ে আইজিপি বলেছেন, দয়া করে নিজের অবস্থান থেকে বের হবেন না। ঢাকা ছাড়বেন না এবং ঢাকায় আসবেন না। জীবনে অনেক ঈদ আসবে। তখন এসব করা যাবে। এমন কিছু করবেন না যাতে এই উৎসব জীবনের শেষ উৎসব হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স রাজারবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে
পবিত্র ঈদুল ফিতর ও করোনাভাইরাসে সৃষ্ট মহামারি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন
আইজিপি আরো বলেন, নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। দেশের প্রতিটি মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ। ঈদে আনন্দ করার জন্য নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দূত হয়ে পরিবারের সামনে হাজির হবেন না।
ঈদের কেনাকাটার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি বা সুরক্ষা বিধিগুলো মেনে শপিং করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেন, সংক্রমণ এড়াতে সতর্ক থেকে শপিং করতে হবে, স্বাভাবিক সময়ের মতো যাচাই বাছাই করে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, শপিংমলগুলো খোলা হয়েছে। আমরা মার্কেট সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি, এসব বিষয়ে সরকার নির্দেশ জারি করেছেন। এক্ষেত্রে মার্কেট সমিতি, সেলসপার্সন, ক্রেতা সবাই বিষয়গুলো মেনে চলবেন।
এ সময় ঘরমুখী মানুষের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে ফেরিঘাটে আটকা পড়েছেন, দয়া করে আপনারা যে যেখানে ছিলেন সেখানে ফিরে আসুন। যারা আটকে আছেন তাদের ফেরার জন্য প্রয়োজনে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
প্রতিবছর ঈদে ঘরফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ তৎপর থাকলেও এবার পুলিশ তার উল্টো কাজটি করছে জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, মনে রাখতে হবে বেঁচে থাকলে আরও অনেকবার পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা যাবে। কিন্তু মারা গেলে কিংবা করোনা আক্রান্ত হলে এখানেই শেষ। তাই আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি, সরকারি যে নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে সেসব মেনে চলুন। দয়া করে কেউ ঝুঁকি নেবেন না। আপনি যেখানে আছেন সেখানেই অবস্থান করুন। যে পরিবারের কাছে যাচ্ছেন ঈদ করার জন্য, সেখানে করোনা সংক্রমণ ছাড়ানোর শঙ্কা তৈরি করবেন না।
আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) আরও বলেন, করোনায় মৃত্যু কিন্তু কোন জুজুর ভয় নয়, এটা রিয়েল ফ্যাক্ট। তাই যে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হয়েছে, আমরা যেন সেসব মেনে চলি। তাহলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস বৈশ্বিক এ দুর্যোগ থেকে জাতি ও দেশের জনগণকে রক্ষা করতে পারবো।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়ে আইজিপি বলেন, এখন দেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুর্যোগ মোকাবিলা করা। সেজন্যেই জনগণের সহযোগিতা দরকার।
সোস্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে আইজিপি বলেন, ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত স্বার্থ হাসিলের জন্য যারা গুজবের মতো অপরাধমূলক কাজ করছেন তাদের গ্রেফতার করা হবে।
পুলিশের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পেছনে পরিকল্পনাগত কোনো ভুল ছিল কি না জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, পুলিশ তার দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে, এখনো করছে। ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ অনেক কাজ করেছে। যেখানে লাশের কাছে পরিবারের কেউ যেতে চায়নি, সেখানে পুলিশ গিয়েছে। এ রকম হলে আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। তবে পুলিশের জন্য আগাম সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং আক্রান্ত হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুধু মাঠপর্যায়ের পুলিশই না, বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাও আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষকে জোর করে ঘরে রাখা যাবে না। তাদের বুঝতে হবে জীবনটা তার নিজের। নিজের সুরক্ষার কথা নিজেকেই ভাবতেই হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী বিপিএম, ডিএমপি কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদসূত্র: ডিএমপি নিউজ