সর্দি-কাশি মানেই করোনার সংক্রমন নয়। বাংলাদেশসহ উত্তর গোলার্ধের অন্যান্য এলাকায় এই সময়টায় এমনিতেই সর্দি-কাশির (সাধারণ ফ্লু) প্রাদুর্ভাব থাকে। তাই, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের সাথে অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ ফ্লু-কে মিলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। আবার, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায় ৮০ শতাংশ কোনো বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হন।
কোভিড-১৯ এর লক্ষণ কী?
আক্রান্ত ব্যক্তির সাধারণত জ্বর, ক্লান্তি এবং শুকনো কাশি দেখা দেয়। কারো কারো ক্ষেত্রে গায়ে ব্যথা, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা বা ডায়রিয়াও হতে পারে। এসব লক্ষণ শুরুতে খুব হালকা মাত্রায় দেখা যেতে পারে যা পরে ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে।
করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির সাথে বেরিয়ে আসা অনুকণার মধ্যে এই ভাইরাস থাকে। সুস্থ কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত ব্যক্তির খুব কাছ থেকে (তিন ফুটের মধ্যে) নিঃশ্বাসের সাথে এই অনুকণা গ্রহণ করলে ভাইরাস তার শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়া, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির পর তার আশপাশের জিনিসপত্রের উপরিভাগে ভাইরাস সম্বলিত এই অনুকণা পতিত হয়। সুস্থ ব্যক্তি খালি হাতে সেই স্থান স্পর্শ করলে তার হাতে ভাইরাস লেগে যায়। পরে, যখন তিনি সেই হাত দিয়ে তার নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করেন ভাইরাসটি তার শরীরে প্রবেশ করে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমন থেকে নিরাপদ থাকার উপায়
 সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন ও খুব ভালোভাবে হাতের উভয় পাশ কবজি পর্যন্ত ধোয়া।
 সাবান ও পানি ব্যবহারের সুযোগ না থাকলে হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে ভালো মানের স্যানিটাইজার ব্যবহার করা।
 হাত না ধুয়ে খালি হাতে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ না করা। আবশ্যিক না হলে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা।
 হঁাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় যিনি হঁাঁচি বা কাশি দিচ্ছেন তার থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরে থাকা।
 নিজে হঁাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় টিস্্ুয দিয়ে বা কনুই ভঁাঁজ করে নাকমুখ ঢাকা এবং ব্যবহৃত টিস্্ুযটি তাৎক্ষনিকভাবে ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলা।
 শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় হ্যান্ডশেক বা আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকা।
 গণপরিবহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা ও বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত গণসমাগমস্থলে গমণ সীমিত রাখা।
 অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে অবস্থান করা। জ্বর ও কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে কি?
অ্যান্টিবায়োটিক কেবল ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনে কাজ করে, ভাইরাস প্রতিরোধে নয়। কোভিড-১৯ যেহেতু ভাইরাস থেকে ছড়ায়, তাই এই ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজ করে না।
সঠিক নিয়মে মাস্ক ব্যবহার
ভাইরাসের সংক্রমন রোধ করতে আক্রান্ত ব্যক্তির মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। ব্যবহৃত মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলতে হবে। সুস্থ ব্যক্তির জন্য মাস্ক ব্যবহার আবশ্যিক নয়। তবে, ব্যবহার করতে চাইলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ময়লা হাতে মাস্ক স্পর্শ করা যাবে না।

ছিদ্রযুক্ত মাস্ক ব্যবহার করা যাবে না।
তথ্যসূত্র:  https://www.who.int/news-room/q-a-detail/q-a-coronaviruses
কোভিড-১৯ সম্পর্কে যেকোনো জিজ্ঞাসা বা কারও মধ্যে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ/উপসর্গ দেখা দিলে আইইডিসিআর এর হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন:  ০১৯২৭-৭১১৭৮৪, ০১৯২৭-৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭-০০০০১১, ০১৯৩৭-১১০০১১।
নিজে সচেতন হই
অন্যকে সচেতন করি
নিরাপদ জীবন গড়ি

পোস্টটি শেয়ার করুন, সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করুন





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন