সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে পুলিশকে সব সময় আইনের রক্ষকের ভূমিকায় ‘জনবান্ধব’ পুলিশ হিসেবে দেখার প্রত্যাশার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোন নিরীহ মানুষ যেন হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার না হয় পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনে এমন সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট এমন নির্দেশনায় এক্ষেত্রে প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকা পুলিশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে কঠোরতার পাশাপাশি নানা কর্মপরিকল্পনা ও কৌশল বাস্তবায়ন করছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।

একাধিকবার নিজ বাহিনীর সদস্যদের কঠিন বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের আচরণেও পরিবর্তন আনতে দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা যেমন গ্রহণ করছেন তেমনি আইনের মধ্যে থাকতে তাদের উদ্ধুদ্ধও করা হচ্ছে। ভালো কাজে পুরস্কার এবং খারাপ কাজ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

অসৎ, দুর্নীতিবাজ, ঘুষ ও মাদক বাণিজ্যে জড়িত এবং অনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত পুলিশ সদস্যদের তালিকা তৈরি করে তাদের নজরদারির আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। পুলিশ প্রধান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ‘মানুষের সঙ্গে অবশ্যই ভালো আচরণ করতে হবে। পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।’

শুরু থেকেই পুলিশ প্রধানের এ বিষয়ে অনড় অবস্থানের প্রেক্ষাপটে ইতোমধ্যেই ইতিবাচক ফল মিলতে শুরু করেছে। কমে এসেছে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় পুলিশ সদস্যদের অপরাধ প্রবণতাও।

অবশ্য অর্জনের এমন আলোকমালায় নিজেকে প্রজ্জ্বলিত না করে প্রতিনিয়ত আবার নিজেকেই অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে চলার প্রতীতিতে পূর্ণ অনির্বাণ মশাল হয়ে নিজেকে সমর্পণ করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। তবে চলমান বাস্তবতায় এ নিয়ে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই বলেই মনে করেন দৃঢ় নৈতিক অবস্থানে শক্তিশালী এ মানুষটি।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের শাপলা সম্মেলন কক্ষে অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত ২০ কর্মকর্তার র‌্যাংক ব্যাজ পরিধান অনুষ্ঠানেও নিজ বাহিনীর কর্মকর্তাদের পুনরায় সতর্ক করেছেন ড.জাবেদ পাটোয়ারী।

পুলিশ প্রধান বলেছেন, ‘থানা হবে পুলিশি সেবার মূল কেন্দ্রবিন্দু। থানায় আগত সেবা প্রত্যাশী মানুষ যেন হাসিমুখে ফিরে যেতে পারে সেজন্য সকল পুলিশ সদস্যকে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে। দ্রুততম সময়ে তাদের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনেক চ্যালেঞ্জে সফলতার সঙ্গেই উত্তীর্ণ হয়েছেন ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)। তাঁর দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বেই নিজ বাহিনীর গৌরবের মুকুটে যুক্ত হয়েছে একেকটি সাফল্যের পালক। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত ও আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্খা বাস্তবায়নে নিজ বাহিনীতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের উদাহরণ তৈরি করেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়া পুলিশ বাহিনীকে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত করতে তাঁর নেতৃত্বেই ২০১৮ সালের মতো চলতি বছরেও কোন রকম অর্থ লেনদেন, দুর্নীতি, অনিয়ম ও তদবির ছাড়াই স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে প্রায় ১০ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

পুলিশ নিয়োগে স্বচ্ছতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীকে থ্যাংকস লেটার (ধন্যবাদপত্র) পাঠিয়েছেন। অতীতে কোন সময়েই পুলিশে নিয়োগ পরীক্ষার পর কোনো সংস্থা আইজিপিকে থ্যাংকস লেটার পাঠায়নি। মূলত প্রধানমন্ত্রীর আপত্য স্নেহের শক্তিতেই পুলিশ প্রধান এই কনস্টেবল নিয়োগে এমন বিরল নজির স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।

প্রজ্ঞাবান প্রধানমন্ত্রী; দায়িত্বশীলতার দীপ্ত শপথ আইজিপির সাফল্যের এসব ধারাবাহিকতায় পুলিশের এ আইজি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন নিরীহ ব্যক্তিদের কোন অবস্থাতেই হয়রানি না করার বিষয়ে। এক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশে নিজের মেধা, মনন, মনোযোগ ও শক্তি দিয়ে গোটা পুলিশ বাহিনীকে বদলে দেওয়ার এ কারিগর আবারো দায়িত্বশীলতার দীপ্ত শপথে উচ্চারণ করেছেন- ‘কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি নয়।’

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। নিজেদের প্রচেষ্টাতেই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের বিচক্ষণতা, দূরদৃষ্টি ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমেই জঙ্গিবাদের ভয়াল থাবা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছেন।

পুলিশ প্রধান ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী সব সময় দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্ত পদক্ষেপের কারণেই জঙ্গিবাদকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। প্র্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনাতেই এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’

অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানেও আইজিপি জঙ্গিদের মোকবেলায় সর্বদা তৎপর ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান। তিনি জঙ্গি দমনে ব্লক রেইড, চেকপোস্ট স্থাপন এবং তল্লাশি অভিযান জোরদার করার জন্য পুলিশের সকল ইউনিট প্রধানকে নির্দেশ দেন তিনি ।

নিজের অসামান্য নেতৃত্বগুণ, বিচক্ষণতা ও ধৈর্যশীলতায় পুলিশ সম্পর্কে জনমনে ইতিবাচক ধারণা ছড়িয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জনবান্ধব’ পুলিশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বদাই নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন পুলিশের এ কান্ডারী।

আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন- বাংলাদেশ পুলিশ বদলে যাচ্ছে:

তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের পুলিশ হওয়ার জন্য কাজ করছি। সাধারণ জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া জনবান্ধব পুলিশ হওয়া সম্ভব নয়। তিনি কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে ‘জনবান্ধব’ পুলিশী ব্যবস্থা গড়ে তোলতেও নির্দেশ দেন।

পুলিশকে বদলে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ:
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশ-জনগণের সম্পর্কের মেলবন্ধন ঘটাতে নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এক সময় অনিয়ম-দুর্নীতি আর অসদাচরণের কারণে পুলিশকে বন্ধু মনে করতো না সাধারণ মানুষ। পুলিশের অনেক দিনের এবং অনেক ইতিবাচক কাজের সাফল্যকে ম্লান করে দিতো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নেতিবাচক কাজ।

সূত্র মতে, পুলিশের মাঠ পর্যায়ে কর্মরতদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষের সঙ্গে অসদাচরণ করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের একটি বিশাল দূরত্ব তৈরি করে রেখেছিল। বাংলাদেশের পুলিশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি জনমনে গভীর শেকড় গাড়ার পর পুলিশকে বদলে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দক্ষ, মেধাবী ও সৎ পুলিশ কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাঁধে পুলিশ বাহিনীর গুরুদায়িত্ব তুলে দেন।

পুলিশের দায়িত্ব নিয়েই নিজ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। পুলিশের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিটি শাখার ওপর তিনি কঠোর নজরদারি শুরুর পর চিহ্নিত ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একেই সঙ্গে পুলিশ প্রধানের নানামুখী উদ্যোগ ও কর্মপ্রয়াসের ফলেই সাধারণ মানুষের মধ্যে অপরাধভীতি ও পুলিশভীতি ক্রমশ কমে আসতে শুরু করেছে।

ইতিবাচক সত্য-সুন্দর ধ্বনি উচ্চকিত পুলিশ কর্মকর্তাদের কন্ঠে:
পুলিশ মহাপরিদর্শকের কড়া বার্তা পৌঁছে গেছে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও। তাঁরাও সাধারণ মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের পক্ষেই সোচ্চার অবস্থানে রয়েছেন। তাদের চিন্তায়, চেতনায়, কর্মে মানবিক, মহৎ, কল্যাণকর, সাধারণ মানুষের জন্য ইতিবাচক সত্য-সুন্দর ধ্বনি উচ্চকিত হচ্ছে। এসব বিষয়ে কালের আলো কথা বলেছে দেশের মাঠ পর্যায়ের শীর্ষ স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে।

পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার) প্রতিবেদক কে বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবল থেকে এসআই পদে নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে। ওসি, এসআই থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে যেন কোন দুর্নীতি না হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। রিক্রুটমেন্ট, পোস্টিং ও প্রমোশন দুর্নীতিমুক্তভাবে করার কাজটি বাংলাদেশ পুলিশই সর্বপ্রথম শুরু করেছে।

তিনি বলেন, মাননীয় পুলিশ প্রধানের কঠোর নির্দেশে এসপি এবং সব থানার ওসিদের বলেছি থানায় যেন কোন নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়। ওসিদেরকে বলে দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা হুবুহু অনুসরণ করতে পারলে পদে থাকতে পারবেন। অন্যথায় এ পদে থাকার সুযোগ নেই। পুলিশের সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি বন্ধ করে জনবান্ধব পুলিশিং নিশ্চিত করতেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।

পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিন বিপিএম (বার) প্রতিবেদক কে বলেন, ‘পুলিশের হয়রানি বন্ধে আমরা নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রথমত পুলিশের মূল কাজ হলো ফৌজদারী মামলার তদন্ত। প্রধানত এ তদন্তের সময়েই মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়। আমরা এ বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করছি।

এর ফলে খুলনা রেঞ্জে পেইন্ডিং মামলা অর্ধেকে নেমে এসেছে। অপ্রয়োজনে কোন বাদীকে ফেরত দেওয়া যাবে না আবার বিবাদীকেও অকারণে হয়রানি করা যাবে না এবং সাধারণ মানুষের থানায় যাওয়ার পথ উন্মুক্ত করার পাশাপাশি পুলিশী সেবা নিশ্চিত করতে ওসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার আনোয়ার হোসেন প্রতিবেদক কে বলেন, আমরা প্রথমেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছি বিনা কারণে কাউকে যানবাহনের মামলা দেওয়া যাবে না। চুক্তিতে আনফিট যানবাহন চলার সুযোগ না দেওয়ার পাশাপাশি টোকেন বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে। থানায় আসা লোকজনের কথা শুনতে হবে এবং তাদের চাহিদা মোতাবেক পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রেফতার বাণিজ্যও পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুর রহমান প্রতিবেদক কে বলেন, পুলিশের কারণেই মানুষের থানায় যাওয়ার ব্যাপারে একটি ভীতি রয়েছে। তাঁরা নির্ভয়ে এসপি অফিসে ঠিকই চলে আসে কিন্তু থানায় যেতে দ্বিধাবোধ করে। মানুষের ভেতরকার এ দ্বিধাবোধ দূর করতেই আমরা কাজ করছি।

তিনি বলেন, মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে অবশ্যই থানায় যাবে এবং থানাকে দালালমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করছি। সাধারণ মানুষের কথা শুনবে এবং আচরণ ভালো এমন ওসিদের আমার জেলার প্রতিটি থানায় দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এসপি অফিসে লোক কম এলেই থানায় মানুষ বেশি যাচ্ছে এবং কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে এমন বার্তাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের।

থানাকে পুলিশী সেবার মূলকেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সাতক্ষীরা  জেলা পুলিশ। জানতে চাইলে সাতক্ষীরা  জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার  প্রতিবেদক কে বলেন, ‘পুলিশ প্রধানের কঠোর নির্দেশনার নিরীহ মানুষ যেন থানায় গিয়ে হয়রানি শিকার না হয় সেজন্য সাতক্ষীরা  জেলা পুলিশ নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি বলেন, হয়রানির পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিটি থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে একটি সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে-এ থানায় জিডি বা মামলা করতে কোন টাকা পয়সা লাগে না। আপনি যদি কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে থাকেন তাহলে নিন্মোক্ত নাম্বারসমূহে সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এ সাইনবোর্ড সামনে রেখে একজন ডিউটি অফিসার সাধারণ মানুষের সঙ্গে অসদাচরণের সাহস করবেন না। আমরা মনে করি মাননীয় আইজিপি মহোদয়ের বদলে যাওয়া পুলিশের এটি একটি অনন্য উদাহরণ।’এছাড়া প্রত্যেক টি থানায় ওপেন হাউজ ডে করা হচ্ছে এবং জনগণ কে তাদের সমস্যা সমূহ নিয়ে পুলিশ সুপারের নিকট খুব সহজে পৌছানোর সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে পুলিশী হয়রানির মাত্রা কমেছে বলে মনে করেন সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) টুটুল চক্রবর্তী বিপিএম।

প্রতিবেদক কে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যাতে কোন রকম হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য আমাদের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার পাবলিক প্লেসে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে ৯৯৯’র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আমাদের সকলের নাম্বার পাবলিক জানে। কোন কিছু হলে তাঁরা আমাদের ফোন করে এবং সেই অনুযায়ীই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’

খুলনা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম শফিউল্লাহ , বিপিএম প্রতিবেদক কে বলেন, আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে সাধারণ মানুষকে কোনভাবেই হয়রানি না করা। ব্রিটিশ আমলের কলোনিয়াল লিগেসি থেকে আমরা অনেকটাই বের হয়ে আসছি। আমাদের কোন অফিসার দ্বারা কোন মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছে এমন অভিযোগ আসা মাত্রই তাৎক্ষণিক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মোট কথা মানুষ কে সেবা দেওয়াই আমাদের প্রধান কাজ।

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত, পিপিএম (বার) প্রতিবেদক কে বলেন, ‘কোন নিরীহ মানুষকে হয়রানির ঘটনা অন্তত কুষ্টিয়ায় নেই। আমার জেলার ৭ টি থানার প্রতিটিতে কতজন আসামি প্রতিদিন ধরা পড়ছেন, তাঁরা কী মামলায় গ্রেফতার হচ্ছেন সুনির্দিষ্টভাবে সেই তথ্য আমাকে সকালবেলা দিতে হয়। প্রতিদিন রাত ১০ টার সময় আমার অ্যাডিশনাল এসপিরা প্রতিটি থানায় খোঁজ খবর নেন হাজতখানায় কোন আসামি রয়েছে কীনা। সন্ধ্যা, রাত এবং সকালে নিয়মিতই বিষয়টি মনিটরিং করা হয়। থানার ওসিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।’

মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, পিপিএম প্রতিবেদক কে বলেন, কোন সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করে তাকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করা প্রতিটি পুলিশ সদস্যের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের মাননীয় পুলিশ প্রধান থানাকে সেবার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার কঠোর বার্তা দিয়েছেন। সেই মোতাবেক আমার জেলার প্রতিটি থানার ওসিকে এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও কেউ হয়রানির শিকার হলে আমাদের কাছে ফোনে বিষয়টি জানাতে পারেন। আমরা সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। অর্থাৎ, প্রতিটি থানায় কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করতে পুলিশ বদ্ধপরিকর।

নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম(বার) প্রতিবেদক কে বলেন, ‘কোন রকম হয়রানি ছাড়া পাসপোর্ট ক্লিয়ারেন্স ও ভেরিফিকেশনের সেবা মানুষ অনলাইনে পাচ্ছে। নিজেরাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে দিচ্ছি। আমি প্রায় শতাধিক বিরোধ মিটিয়েছি। থানায় সেবা প্রার্থীদের সেবা নিশ্চিত করতেও আমরা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকটি থানার ওসিকে মোটিভেট করেছি। তাদেরকে বলেছি তোমাদের সমস্যা আমার সঙ্গে শেয়ার করো। এ মোটিভেশনের মাধ্যমে নড়াইলের প্রতিটি থানা দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় প্রত্যেকের কাছেই আমিসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার রয়েছে। যে কেউ অবলীলায় আমাদের ফোন দেন। তাদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা শতভাগ আন্তরিকতার সঙ্গেই কাজ করছি।’

সূত্র: কালের আলো নেট।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন