নলতা পাক রওজা মোবারকের খাদেম হুজুর মৌলভী আনসার আলীর তিরোধানে সাতক্ষীরার মাটিতে এক নক্ষত্র মানুষের জীবনাবসান
পীর কেবলা খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ (র:) এর রওজার খাদেম হুজুর আজ ইনতেকাল করেন।ইন্না নিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন।আধ্যতিক জগতের এক নক্ষত্র মানুষকে আমরা হারালাম।কাফনের কাপড় পড়া এক অনন্য মানুষ।যিনি ৩৬০ দিন রোজা রেখে জীবন পাড়ি দিয়েছেন।সদা হাস্যময়,নুরানী চেহারা।জোনাকীর আলোয় আলোকময়।যখনি তাঁর কাছে গেছি তিনি কতো মমতায় অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।হাত ধরে নিয়ে গেছেন হাত ছাড়েননি।খাবার টেবিলে বসে নিজে রোজা রেখেও কতো ধরনের আপ্যায়ন করেছেন।মাজারটি তিনি কতো বিচিত্র ফুল দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন।মসজিদ,চক্ষু হাসপাতাল,স্কুল কলেজ মাদ্রাসা বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করেছেন।প্রতি শুক্রবার নামাজের পর খাওয়ার ব্যবস্থা।রমজান মাসে দশ হাজার মানুষের ইফতার প্রতিদিন।২০০৯ সালে ২৫ মে আইলার আঘাতে সাতক্ষীরার উপকূল যখন বিধবস্ত তখন ডেকচি ভরে খিচুড়ী রান্না করে দুর্গত এলাকায় পাঠায়েছেন।
২জুলাই ২০০৯,১৮ আষাঢ আমার আব্বা বিদায় নিলেন।আইলায় বিধবস্ত সাতক্ষীরায় আমি ত্রান ও পুনর্বাসন কাজ নিয়ে দিন রাত ব্যস্ত এসময় আব্বার বিদায়ে বিষাদগ্রস্ত।এ সময় খাদেম হুজুরের এক খানা পত্র পেলাম।পত্রের ভাষা পড়ে আমি অভিভূত।এরকম ভাষা আমি জীবনে প্রথম পড়লাম।আবার পত্র খানা পাঠ করলাম।আমার জীবনে পাওয়া শ্রেষ্ঠ পত্র।বাধাঁই করে টানিয়ে রাখলাম।পত্রের শুরু এ রকম:
আশেকে ওলীর খেদমতেষু,
এই কীটানুকীটের,এই দাসানুদাসের,এই নালয়েকের,এই কমতরণের শতকোটি ছালাম,কুর্নিশ ও ভক্তিশ্রদ্ধা গ্রহন করিবেন।শাহী দরবারে ভক্তিঅর্ঘ্য পেশ করিয়াছি।স্মৃতি ক্ষুদ্রবক্ষে বিরাজমান।
পত্রের বাকী অংশ উল্লেখ করলাম না।সমবেদনা ও প্রার্থনা মূলক পত্র।পরে জেনেছি পীর কেবলা এভাবে পত্র লেখতেন।নিজেকে কতো ছোট জ্ঞান করে।
এ রকম কতো স্মৃতি,কতো অনুষঠানে উপস্থিত হয়েছি।সবকিছুর পরিকল্না তার, অসাধারন দক্ষতা।এই শ্রেষ্ঠ মানুষটিক আল্লাহ পাক আপনি নিয়ে গেলেন,আমাদের জন্য থাকলো গভীর শূন্যতা।
আল্লাহ আপনিতো আমাদের সৃষ্টিকর্তা আপনার কাছেই আমাদের সব চাওয়া।
আজ বর্ষনে বর্ষনে সিক্ত দিনে বর্ষার পবিত্র ধারায় বর্ষার রঙের মতো আমাদের প্রার্থনা এই শ্রেষঠ মানুষটির জন্য আপনি আপনার রহমতের ধারা বহমান রাখবেন।
লেখক : মো:আবদুস সামাদ
সাবেক জেলা প্রশাসক,সাতক্ষীরা,সাবেক বিভাগীয় কমিশনার,খুলনা, সাবেক সিরিয়র সচিব নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এসডিএফ চেয়ারম্যান বাংলাদেশ।