ঘুর্ণিঝড় ‘ফণি’ মোকাবেলায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করায় নৌখাতে কোন ধরণের ক্ষতি হয়নি। মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোল রুম দিন-রাত খোলা ছিল। কন্ট্রোল রুম থেকে তথ্য পেয়ে জনগণ উপকৃত হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছেন। সেজন্য সকলকে ধন্যবাদ। গত রাত থেকে ফেরি চালু হয়েছে। আজ থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মেরিন একাডেমীর ডেক ক্যাডেট মোঃ আলি আজগরের পরিবারের নিকট ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ কালে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে চোখের চিকিৎসারত অবস্থায় দেশের ঘুর্ণিঝড়ের খোজঁখবর নিয়েছেন ও দেশবাসির কল্যাণ কামনা করায় তাঁর প্রতিও প্রতিমন্ত্রী আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জন্ম মৃত্যু সবকিছু আল্লাহর কাছে। এতে কারো হাত নেই। মৃত্যুর কোন ক্ষতিপূরণ নেই। ক্ষতিপূরণের অর্থ দিয়ে দুঃখ ভোলার বিষয় নয়। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি কঠিন অবস্থার মুখোমুখি, তাদের জন্য কঠিন বাস্তবতা। তিনি বলেন, পরিবারটি সন্তান হারিয়েছে। আমরা হারিয়েছি একজন দক্ষ নাবিক। শুরুতেই হারিয়ে গেল। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা প্রতিটি নাবিকের পাশে আছি। তাদের পরিবারের সহযোগিতায় পাশে থাকব।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মরহুমের পিতা-মাতাকে দুঃখ কষ্ট সহ্য করার শক্তি দিতে আল্লাহর নিকট কামনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী মৃত ক্যাডেট আলী আজগর এর পিতা মোঃ আলী আকবর খান এবং মাতা মোছাঃ রাজিয়া আকবর এর নিকট জীবন ক্ষতিপূরণের ৮৩,৩৮,১২৩/- টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, মৃত ক্যাডেটের পিতামোঃ আলী আকবর খান এবং মেরিন হাইভ লিমিটেডের চেয়াম্যান ক্যাপ্টেন শামসুল এ খান বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমীর ৫১ তম ব্যাচের ডেক ক্যাডেট মোঃ আলী আজগর, সরকারী শিপিং অফিস চট্টগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয় ম্যানিং এজেন্ট মেসার্সা মেরিন হাইভ লিঃ এর ব্যবস্থাপনাধীন গঠ উঅখও নামক জাহাজের চুক্তিপত্র সাইন অন করেন। পরবর্তীতে জাহাজ পরিবর্তনের কারণে গ.ঠ. অংরধ চবধৎষ-ঠ নামক জাহাজে গত ০৮/০৭/২০১৮ ইং তারিখে জওঙ উ ঔঅঘঊওজঙ, ইজঅতওখ বন্দরে যোগদান করেন। জাহাজটি আর্জেন্টিনার চটঊজঞঙ ঝঅঘ গঅজঞওঘ পোর্টে অবস্থানকালীন সময়ে জাহাজ মাষ্টারের অনুমতি নিয়ে শোর লিভ-এ যাবার সময় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।
স্থানীয় ম্যানিং এজেন্ট মেসার্স মেরিন হাইভ লিঃ জাহাজ কোম্পানীর নিকট থেকে ক্যাডেট আলী আজগরের মৃত্যুর সংবাদটি জানার সাথে সাথেই বিষয়টি নৌপরিবহন অধিদপ্তর এবং চট্রগ্রামস্থ সরকারী শিপিং ও তার পরিবারকে জানান। স্থানীয় ম্যানিং এজেন্ট মেসার্স মেরিন হাইভ লিঃ কর্তৃক মৃত ক্যাডেটের মরদেহ গত ১২-১০-২০১৮ খ্রিঃ তারিখে কোম্পানীর নিজ খরচে ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন এবং তার গ্রামের বাড়ী আজগর কাঠি, পোঃ নলি বন্দর, থানা ও জেলা-বরগুনায় নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করেন। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় ম্যানিং এজেন্ট মেসার্স মেরিন হাইভ লিঃ এবং বিভিন্ন ক্যাডেটের সহায়তায় প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে মৃত ক্যাডেটের মায়ের নামে ডিপোজিট করা হয়।
পরবর্তীতে স্থানীয় ম্যানিং এজেন্ট মেসার্স মেরিন হাইভ লিঃ এর উদ্যোগে প্রটেকশন এন্ড ইনডেমনিটি (চ্ও) ক্লাবের সহযোগিতায় এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দিক নির্দেশনার মাধ্যমে পারিবারিক ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১ লক্ষ ডলার এর সমপরিমান ৮৩,৩৮,১২৩/- টাকা গ্রহণ করা হয়।

মরহুম আলী আজগর ২০১৭ সালে মেরিন একাডেমীর ৫১ তম ব্যাচ এ নটিক্যাল বিভাগ থেকে পাশ করেন। এরপর তিনি ‘মেরিন হাইভ লিমিটেড’ ম্যানিং এজেন্ট থেকে জাহাজে যোগদানের লক্ষ্যে পাঁচ বছরের জন্য চায়নায় উচ্চ প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এ চুক্তিবদ্ধ হন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার আগেই দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন ।

 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন