বরিশালের বানারীপাড়ার যুবক অলি উল্লাহ। একসময় পড়াশোনা করতেন ছারছীনা দারুসসুন্নাত মাদ্রাসায়। দুই বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয় তাকে। বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। একইসঙ্গে তাকে ঘিরে অসচ্ছল মা-বাবার স্বপ্নও ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়।
এমন অবস্থায় পরিবারের বোঝা হয়ে থাকা অলি উল্লাহর পাশে দাঁড়ালেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জাহিদুল ইসলাম। তার ডাকে সাড়া দিলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী কবির হোসেন।
বানারীপাড়া থানায় কর্মরত এই পুলিশ সদস্য অলি উল্লাহকে কিনে দিলেন ৫০টি ডিম দেয়া হাঁস। তার হাঁসের খামারের জন্য ঘর নির্মাণ করতে সহায়তার হাত বাড়ালেন প্রবাসী কবির হোসেন। তাদের আশা- এই হাঁসের ডিম বিক্রির টাকা দিয়ে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাবেন অলি। পরিবারে বোঝা হওয়ার বদলে সেও হয়ে ওঠবেন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
মঙ্গলবার নিরাপদ সড়ক দিবসে সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু অলি উল্লাহর এই হাঁসের খামার উদ্বোধন করেন বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খলিলুর রহমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আ. জলিল ঘরামী, উদয়কাঠি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. মামুন-উর-রশীদ স্বপন, এএসআই জাহিদুল ইসলাম, মো. কবির হোসেন।
অলি উল্লাহ বানারীপাড়া সদর উপজেলার জম্বদীপ গ্রামের নবির হোসেন বেপারীর একমাত্র ছেলে।
জানা গেছে, এর আগেও পেশাগত কাজের বাইরে নানা সময় সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বেশ কিছু কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদ। সমাজসেবায় চারবার ও ওয়ারেন্ট তামিলে দুইবার বরিশাল জেলার শ্রেষ্ঠ এএসআই’র পুরস্কার লাভ করেছেন।কে
আপডেট সাতক্ষীরা কে জাহিদুল ইসলাম বলেন, অলি উল্লাহ পিতা-মাতার ভবিষ্যতের একমাত্র অবলম্বন হলেও এখন তাদের বোঝা। তাই ওকে মা-বাবার বোঝা না হতে হয় এজন্য ওকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেই। আমার সঙ্গে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন মালয়েশিয়া প্রবাসী কবির হোসেন।
তিনি বলেন, অলি উল্লাহর ভিটেমাটি ছাড়া ঘরের পেছনে ছোট্ট একটি পুকুর ছাড়া জমিজমা বলতে আর কিছুই নেই। যে কারণে চিন্তা করেছি তাকে যদি কিছু হাঁস দেয়া হয় সেগুলো থেকে প্রতিনিয়ত ডিম পাবে। তা দিয়ে সংসারে সহযোগিতা করতে পারবে।
এভাবে অসহায় দুঃখী মানুষের পাশে সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এলে সমাজ থেকে বেকারত্ব ও দরিদ্রতা দূর করা সম্ভব বলেও মনে করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।