দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক নেতাদের অন্যায় আবদার না শুনে পুলিশকে সাহস ও পেশাদারির জায়গা থেকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে এবং ‘না’ বলাটা শিখতে হবে। এ কাজটি করতে পারলেই পুলিশ সাধারণ মানুষের বন্ধু বলে বিবেচিত হবে— এ কথা বলেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) নূর মোহাম্মদ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে গতকাল বিকালে আলাপচারিতায় তিনি পুলিশের অবশ্যই করণীয় বিষয়ে নিজের অভিমত তুলে ধরছিলেন। নূর মোহাম্মদ বলেন, পুলিশ হলো সমাজের আস্থা ও ভরসার প্রতীক।
মানুষ যখন খুব বিপদগ্রস্ত থাকেন সুবিচার পাওয়ার আশায় তখনই পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশের কাছে গেলে যে আচরণটা পাবেন এটা দেখে বোঝা যাবে দেশটা কেমন চলছে। তিনি বলেন, পুলিশকে ভালো করবেন কারা? পুলিশ তো স্বাধীন প্রতিষ্ঠান নয়।
আমাদের মতো দেশে পুলিশের কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিল, আছে, থাকবে— এ থেকে বের হতে পারবে না। কয়শ বছরে বের হতে পারবে আমরা জানিও না। সব প্রতিষ্ঠানের ভালো দিক যেমন আছে, খারাপ দিকও আছে। অন্যদের খারাপ দিকটা যত না মানুষকে ভোগায় পুলিশের খারাপ দিকটা এর চেয়ে অনেক বেশি ভোগায়। এর জন্য পুলিশের ওপর রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ অনেকাংশে দায়ী বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, পুলিশের নিয়োগ প্রশিক্ষণ ও পদায়নের ক্ষেত্রে যোগ্যদের বিবেচনা করতে হবে; যারা ভালো যারা পেশাদার যাদের মধ্যে একটু দেশ ও জাতির প্রতি চিন্তাটা পজেটিভ। ভালো একটা চিন্তাভাবনা নিয়ে পুলিশে এসেছেন তাদের যোগ্য জায়গায় পদায়ন করতে হবে। যোগ্য লোককে যোগ্য জায়গায় পদায়ন করা না হলে পুলিশের যে ইমেজ সংকটের কথা বলি তা কখনই যাবে না। পুলিশে অনেক ভালো ভালো কর্মকর্তা আছেন তাদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। তাদের দেখে যেন অন্য ১০ জন চিন্তা করে ‘তাদের ফলো করলে আমি ভালো চাকরি করতে পারব, আমার পদোন্নতি হবে, নিজেকে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে পারব। ’ কেউ যদি দেখে খারাপ উদাহরণের কেউ ভালো আছে তাহলে তিনি কেন যন্ত্রণার মধ্যে জড়াবেন! অনেক এলাকায় পেশাদার পুলিশ কর্মকর্তারা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আজ্ঞাবহ না হলে তাদের বিভিন্ন অপবাদ দেওয়া হয়। এ অপবাদ মাথায় নিয়ে পেশাদার কর্মকর্তারা দিনের পর দিন কাজ করতে পারেন না। ছাত্রজীবনে অনেকেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু চাকরিতে এসে এটার প্রভাব পড়া উচিত নয়।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।