পঁচাত্তোর বছরের বৃদ্ধ মালেক সরদার।তার ৩ টি ছেলে ও ১ টি মেয়ে আছে ।বাড়ি শহরের মাঝখোলা ক্লাবের পাসে।বৃদ্ধ মালেক সরদার কে তার ছেলে আর ছেলের বৌ মিলে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।বৃদ্ধ লোকটি আজ ২ মাস হলো মাঝখোলা ক্লাবের পাসে একটি চায়ের দোকানের বেঞ্চের উপরে বসবাস করছে।বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে এক যুবক ফেইজবুকে স্টাটাস দিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে। সেই ফেইজবুকের পোষ্টটি দৃষ্টিগোচর হয় সাতক্ষীরার মানবিক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম-বার এঁর।

পুলিশ সুপার বিষয়টি সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মো:দেলোয়ার হুসেন কে জানালে সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বর্ষা কাঁদা উপেক্ষা করে সদর ও ট্রাফিক পুলিশের টিআই কামরুজ্জামান বকুল মাছখোলা ক্লাবের সামনে (বৃদ্ধ লোকটি যে দোকানের বেঞ্চে বসবাস করে) সেখানে যান।ওসি গিয়ে দেখতে পান ৭৫বছরের  বৃদ্ধ মালেক এশার নামাজ আদায় করছে দোকানের ঐ বেঞ্চের পরে।পরে ওসি দেলোয়ার ঐ গ্রামের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডাকেন পাশাপাশি বৃদ্ধের ছেলে রবিউল ও রবিউলের স্ত্রীকে ডাকেন।এরপর একটি দোকানের সামনে ফাঁকা জাগায় ৩টি চেয়ার দিয়ে ওসি ঐ বৃদ্ধ পিতা, বৃদ্ধের ছেলে রবিউল ও রবিউলের স্ত্রীকে বসিয়ে তাদের কাছে শোনেন,,,, কেনো আপনি আপনার বৃদ্ধ পিতা কে বাড়ি থেকে আজ দুই মাস তাড়িয়ে দিলেন।

ওসির প্রশ্নের জবাবে বৃদ্ধের ছেলে রবিউল তার পিতার ডজন খানিক দোষত্রুটি উপস্থাপন করলো।ছেলের অভিযোগ শুনেই তখন চেতে গেলেন জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই কামরুজ্জামান বকুল।

তিনি ঐ ছেলেকে ধমক দিয়ে বলেন,এই ছেলে যে বাবা তোমাকে জন্ম দিয়েছেন,কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন, তার তুমি দোষ খুজে বেড়াও কেনো? মানুষের বষয় ৭০+ হলে সে একটু ভুল-ভাল বকে বা ভুল কাজ করতেই পারে। কারন বৃদ্ধ বয়সে মানুষ ছোট শিশুর মত আচরণ করে। তাই বলে তুমি তোমার জন্ম দাতা পিতা কে বাড়ি থেকে বের করে দেবে? টিআই কামরুজ্জামানের কথা শুনে রবিউল একটু হলেও অনুতপ্ত হলেন।

পরে সাতক্ষীরা থানার ওসি দেলোয়ার হুসেন গ্রাম বাসির উপস্থিতিতে বলেন, ছেলেরা যদি বাবার দায়িত্ব না নেয়,গ্রামের লোক যদি বৃদ্ধের ভরণপোষণের দায়িত্ব না নেয় তাহলে এই বৃদ্ধের দায়িত্ব সাতক্ষীরা থানা পুলিশ নেবে। আমরা বৃদ্ধের জন্য নির্বাহী অফিসারের কাছে বয়স্ক ভাতার কার্ড চাইবো।আমরা এই বৃদ্ধের জন্য সরকারী খাস জাগায় বসবাস করার ব্যবস্থা করে দেবো ।কেউ দায়িত্ব না নিলে পুলিশই বৃদ্ধের দায়িত্ব নেবে। পরে আলোচনা শেষে ওসি বৃদ্ধের ছেলে কে বলেন পিতা কে বাড়ি নিয়ে যেতে। এসময় ওসি দেলোয়ার হুসেন ও জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই কামরুজ্জামান বৃদ্ধের হাতে কিছু নগত অর্থ প্রদান করেন।বৃদ্ধ মালেক এসময় পুলিশের মানবতা দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় সেখানে সদর ফাড়ির পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন সহ এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন