আগামী শনিবার (৩১) সারা দেশে কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২০ উদযাপিত হবে। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের মূলমন্ত্র, কমিউনিটি পুলিশিং সর্বত্র’। দেশব্যাপী উৎসাহ, উদ্দীপনা ও আনন্দমুখর পরিবেশে দিবসটি উদযাপনের জন্য নানা কর্মসূচি ও প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট।

বৃহস্পতিবার(২৯ অক্টোবর) পুলিশ সদর দপ্তরের এআই‌জি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রিলেশন্স) মো. সো‌হেল রানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের যথাযথ প্রসার ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিকল্পে সকলের মধ্যে স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি ও বাস্তব ক্ষেত্রে তা প্রয়োগের ক্ষমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পুলিশ ও জনগণকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার যে যাত্রা আমরা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সে যাত্রায় সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশও একান্ত সারথী হিসেবে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’ বাংলাদেশ পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে পুলিশ সদস্যদের সদা সচেষ্ট থাকতে তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘দেশব্যাপী কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে ৬০ হাজার ৯৮১টি কমিটির মাধ্যমে ১১ লাক ১৭ হাজার ৮০ জন কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য পুলিশের সঙ্গে একযোগে অংশীদারির ভিত্তিতে কাজ করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সমাধানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে, বাংলাদেশ রেলওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং হাইওয়ে পুলিশেও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে অপরাধ দমনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ।’

আগামী দিনেও নারী নির্যাতন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কমিউনিটি পুলিশিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তার বাণীতে বলেন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণ ও পুলিশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধাবোধ ও সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ, যেমন- মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা, ইভটিজিং ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। এছাড়া জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণেও প্রয়োজনীয় আগাম তথ্য দিয়ে কমিউনিটির সদস্য তথা সমাজের মানুষ পুলিশকে সহযোগিতা করতে পারেন। ফলে জনবান্ধব পুলিশিংয়ের পথ সুগম হওয়ার পাশাপাশি অপরাধ দমনে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন তার বাণীতে বলেন, ‘বাংলাদেশে কমিউনিটি পুলিশিং ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ কর্মকৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২০ উদযাপনের মাধ্যমে জনগণ ও পুলিশের মাঝে আন্তরিকতা, সহযোগিতা, স্বতঃস্ফূর্ততা আরও বৃদ্ধি পাবে- যা আগামী দিনগুলোতে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) তার বাণীতে বলেন, ‘সনাতন অপরাধের পাশাপাশি নিত্যনতুন অপরাধ মোকাবেলায় প্রজ্ঞা ও প্রযুক্তির মেলবন্ধনে বাংলাদেশ পুলিশে নতুন ধারার যে পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে, জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে পরিচালিত কমিউনিটি পুলিশিং উদ্ভাবনী পুলিশিংয়ের সে ধারাকে নিঃসন্দেহে আরও ফলপ্রসূ করবে। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়ে ওঠা এ স্বাধীন দেশের পুলিশ কমিউনিটি পুলিশিং চর্চার মাধ্যমে জনগণের সহযোগিতায় জনপ্রত্যাশা পূরণ করে ‘জনগণের পুলিশ’ হয়ে উঠবে- মুজিববর্ষের কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২০-এ এই আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।’

দেশের সব জেলা, মেট্রোপলিটন, রেলওয়ে, হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ইউনিট স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন করবে। শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার এবং কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যদের সনদ ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে।

সব ইউনিট তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে কমিউনিটি পুলিশিং ডে সম্পর্কে প্রচারণা চালাবে।

কমিউনিটি পুলিশিং ডে-এর তাৎপর্য তুলে ধরে সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিশেষ টক শোর আয়োজন করেছে। জাতীয় পত্রিকাগুলোতে এ উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।

‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’- এ নীতিতে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও অপরাধ দমনের অন্যতম কৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে কমিউনিটি পুলিশিং।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন